সময় পেরিয়েছে চার দশকেরও বেশি। কিন্তু হাল ফেরেনি কসবা শিল্পতালুকের।
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের কাছে আনন্দপুর রোডে রয়েছে তিন ‘ফেজ’-এর এই শিল্পতালুক। এখানকার প্রবেশপথ দীর্ঘ দিন ধরেই বেহাল। রাস্তার দু’ধার দখলদারদের কবলে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বর্ষায় রাস্তার হাল এমন হয় যে যাতায়াত কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে। রাস্তা জুড়ে গর্ত, আবর্জনার ছড়াছড়ি, দখলদারির জন্য পথচারী আর গাড়ির গা ঘেষাঘেষি করেই চলাটাই আনন্দপুর রোডে দস্তুর। দেখলে বোঝার উপায় নেই এই রাস্তা কোনও শিল্পতালুকের প্রবেশপথ।
ক্ষুদ্রশিল্প উন্নয়ন নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, কসবা শিল্পতালুকে ঢোকার রাস্তাটি কেএমডিএ-র আওতায় রয়েছে। |
নিগমের তরফে একাধিক বার জানান হয়েছে কেএমডিএ-কে। যদিও কেএমডিএ-র সিইও অরূপ শা বলেন, “কসবা শিল্পতালুকের রাস্তার সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে কেউ কোনও আবেদন জানায়নি। যদি ওই চত্বরের মধ্যে কোনও রাস্তা আমাদের আওতাধীন হয় তা খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কসবা শিল্পতালুকের এক নম্বর ফেজ থেকে ঢোকার পরে কিছুটা এলাকার পরিবেশ একটু ছিমছাম। এর পরে যত ভিতরে যাওয়া যায় ততই বেরিয়ে আসে বেহাল ছবিটা। কোথাও ডাস্টবিন উপচে বেরিয়ে আসছে আবর্জনা। কোথাও আবার উপচে উঠছে নর্দমার জল। বৃষ্টির জল জমে সবুজ হয়ে গিয়েছে জায়গায় জায়গায়। রাস্তা কাদায় ভর্তি। জমা আবর্জনার গন্ধে গা গুলিয়ে ওঠে। শিল্পতালুকের অনেক জায়গা এখনও ফাঁকা পড়ে রয়েছে। দীর্ঘ দিন পরিষ্কার না করায় সেই সব জায়গা জঙ্গল আর আগাছায় ভরে রয়েছে।
একটি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থার ওয়ার্কশপের এক কর্মীর কথায়: “এই অবস্থার মধ্যেই আমাদের রোজ কাজ করতে হয়। বার বার বলা সত্ত্বেও এই অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি।” খাদ্য প্রস্তুতকারক একটি সংস্থার আর এক কর্মীর মন্তব্য: “হাওয়া দিলেই জমা আবর্জনার দুর্গন্ধে টিকতে পারি না। কিন্তু কী করব? সরকার থেকে এই ব্যবস্থার প্রতিকার না করলে আমরা অসহায়।”
|
কলকাতার উপকণ্ঠে একটি শিল্পতালুক এই রকম বেহাল দশায় পড়ে থাকে কী করে?
রাজ্য ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগমের এক কর্তার দাবি, “কসবা শিল্পতালুকের সমস্যা আজকের নয়। কসবার মতো শিল্পতালুকগুলির ব্যাধি জন্ম থেকেই। এখন সেই সমস্যাগুলিকে একটি একটি করে চিহ্নিত করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী ধাপে ধাপে সমাধানের চেষ্টাও করা হচ্ছে।
তবে রোগ অনেক দিনের হওয়ায় সারতে সময় নেবে।”
ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান কর্ণেল সব্যসাচী বাগচী বলেন, “কলকাতার আশপাশে যে সমস্ত শিল্পতালুক রয়েছে তার উন্নয়নের জন্য রাজ্যের থেকে পাঁচ কোটি টাকা পেয়েছে নিগম। সেই টাকা দিয়ে সব ক’টি শিল্পতালুকের উন্নয়ন করা হবে। এর মধ্যে কসবা শিল্পতালুকও রয়েছে।” |