দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
নিত্য দুর্ভোগ
অপূর্ণ সংস্কার
পূর্ত দফতর আর কলকাতা পুরসভার চাপানউতোর। ফলে কথা থাকলেও এক বছরের মধ্যে শেষ হল না মহাবীরতলা থেকে ঠাকুরপুকুর মোড় পর্যন্ত সাত কিলোমিটার দীর্ঘ মহাত্মা গাঁধী রোডের সংস্কারের কাজ। অর্ধেক রাস্তায় ম্যাসটিক অ্যাসফল্ট করা হয়ে গেলেও, অর্ধেক রাস্তার কাজ এখনও বাকি। অসমাপ্ত অংশে বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে। প্রতি দিন রাস্তার এই বেহাল দশার ফল ভোগ করছেন নিত্যযাত্রীরা।
টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড সংলগ্ন মহাবীরতলা থেকে ঠাকুরপুকুর মোড় পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু করেছিল পূর্ত দফতর। বরাদ্দ করা হয়েছিল প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। ’১২-র মার্চে সারাইয়ের কাজ শুরু হয়।
ঠাকুরপুকুর মোড় থেকে কেওড়াপুকুর মোড় পর্যন্ত রাস্তা সারাই করে ম্যাসটিক অ্যাসফল্ট বসানোর কাজ হলেও, বাকি রাস্তার কাজ এখনও হয়নি। এই অংশে অনেক জায়গাতেই পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। অটো, মোটরসাইকেল, সাইকেল এবং রিকশায় যাতায়াত করতে সমস্যা হচ্ছে। বর্ষায় অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। বিশেষ করে সমস্যা পড়েছেন অটোচালকেরা। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তাটি এমনিতেই খুব সরু। ফলে গর্ত বাঁচিয়ে গাড়ি চালাতে খুব সমস্যা হচ্ছে। তা ছাড়া এলাকাটি কলকাতা পুলিশের অধীনে আসার পরেও লরি যাতায়াত বন্ধ হয়নি। সকালেও লরি ঢুকে পড়ছে। তাতে রাস্তার অবস্থা দ্রুত খারাপ হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপ আদক বলেন, “ওই এলাকায় নজরদারি-ক্যামেরার সংখ্যা কম থাকায় কিছু ক্ষেত্রে লুকিয়ে লরি ঢুকে পড়ছে। আমরা ধরতে পারলে কেস দিচ্ছি।”
কেন কাজ সম্পূর্ণ হল না?
ওই রাস্তার দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (দক্ষিণ ২৪ পরগনা হাইওয়ে ডিভিশন) বিনয় মজুমদার বলেন, “ওই রাস্তাটি সংস্কারের বরাত যে সংস্থা পেয়েছে তারা ধীর গতিতে কাজ করছে। তা ছাড়াও, রাস্তাটির উপরের ম্যানহোলগুলিকে তিন ইঞ্চির মতো উঁচু করতে হবে। কারণ, রাস্তাটির উপরে দু’ইঞ্চি বিটুমিন এবং তার উপরে এক ইঞ্চি ম্যাসটিক দেওয়া হবে। ম্যানহোলগুলি উঁচু করার দায়িত্ব কলকাতা পুরসভার। পুরসভা এখনও পর্যন্ত তা করে উঠতে পারেনি। তাই বাকি রাস্তার কাজ শেষ হয়নি।” যে অংশের কাজ হয়নি, তার বেশির ভাগ অংশই ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তর্গত। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের রত্না শূরের অভিযোগ, “এই রাস্তার উপরে জজবাগান থেকে করুণাময়ী মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে ভূগর্ভস্থ নদর্মার সঙ্গে প্রতিটি বাড়ির নিকাশির যোগ রয়েছে। রাস্তা সারাইয়ের সময় পূর্ত দফতর এগুলি বন্ধ করে দেয়। এখনও এগুলি খোলা হয়নি। ফলে বাড়িগুলির নিকাশির সমস্যা হচ্ছে।” মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, “রাস্তাটি পূর্ত দফতরের। ওখানে আমাদের কিছু করার কথা নয়। সব কিছুর দায়িত্ব পূর্ত দফতরের।”

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.