কলকাতা থেকে রাজারহাট যাবেন?
এ বর্ষায় সে যাত্রা মোটেই সুখের হবে না। কারণ, রাজারহাটগামী তিনটি রাস্তারই বেহাল দশা। গর্তে ভরা, এবড়ো-খেবড়ো, যেখানে-সেখানে জল জমে আছে। কোনওক্রমে গাড়ি চলাচল করে। অভিযোগ, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ হওয়ায় বর্ষায় রাস্তাগুলির এই দশা হয়েছে। কলকাতা থেকে রাজারহাট যাওয়ার প্রথম রাস্তা ২১১ নম্বর বাসরুটের রাস্তা। এটি ভিআইপি রোডের জোড়ামন্দির থেকে শুরু হয়ে রাজারহাট চৌমাথা ছাড়িয়ে খড়িবাড়ি, আমিনপুর হয়ে টাকি রোডে মিশেছে। অন্যান্য গাড়ি ছাড়াও বাংলাদেশগামী পণ্যবাহী গাড়িও এই রাস্তা ব্যবহার করে। তা ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার গ্রামাঞ্চল থেকে এ পথে অনেক রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।
|
এই রাস্তাটির রাজারহাট চৌমাথা থেকে চিনার পার্ক পর্যন্ত প্রায় ছ’কিলোমিটার অংশ দু’-তিন মাস আগে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) বিভাগ মেরামত করে। কিন্তু এর মধ্যেই রেকজোয়ানি, জগারডাঙা, ডিরোজিও কলেজ, আটঘরা মতো কয়েকটি জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কোথাও আবার রাস্তা বসে গিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ হওয়ায় বর্ষায় রাস্তার এই অবস্থা হয়েছে। চিনার পার্ক থেকে জোড়ামন্দির পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার দীর্ঘ দিন মেরামতি হয়নি। নানা অংশ ভেঙে গিয়েছে। বর্ষায় অনেক জায়গায় জল জমে গিয়েছে। |
কলকাতা থেকে রাজারহাটে পৌঁছনোর দ্বিতীয় রাস্তাটি হল ৯১ নম্বর বাসরুটের রাস্তা বা স্যর রমেশ মিত্র রোড। ভিআইপি রোডের কৈখালি বাস স্টপ থেকে এই রাস্তাটি নারায়ণপুর, মণিখোলা, বেড়াবেড়ি হয়ে রাজারহাটে ঢুকেছে। নানা রুটের শ’খানেকেরও বেশি বাস এ রাস্তায় চলে। রাজারহাট পর্যন্ত আট কিলোমিটার রাস্তা বর্ষায় গর্তে ভরে উঠেছে। কোথাও কোথাও গর্ত ১০-১৫ ফুট দীর্ঘ। প্রতি মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। অভিযোগ, কয়েক বছরের মধ্যে রাস্তাটির মেরামতি হয়নি। গর্তে পড়ে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। এই রাস্তাটিও রাজ্য পূর্ত (সড়ক) বিভাগ দেখাশোনা করে। পূর্ত (সড়ক) বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, “নিম্নমানের উপকরণের অভিযোগ ঠিক নয়। বর্ষার জল জমে রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বর্ষায় পিচের কাজ করা সম্ভব নয়। শুধু গর্ত ভরাটের কাজ হয়। দ্রুত মেরামতির চেষ্টা করছি।”
|
কলকাতা থেকে রাজারহাটে প্রবেশের তৃতীয় রাস্তাটি রাজারহাটের রেকজোয়ানি মোড় থেকে নিউটাউনের মেজর আর্টারিয়াল রোডের নবাবপুর বাসস্টপ পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রায় সাড়ে ৩ কিমি দীর্ঘ এই রাস্তার ধারেই রয়েছে রেকজোয়ানি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এ পথে অটো ছাড়া ছোট-মাঝারি যান যাতায়াত করে। বছর দশেক আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ এই রাস্তায় পিচের কাজ করে। কয়েক মাস আগে হিডকো রাস্তাটির মেরামতি শুরু হয়। কিন্তু নিউ টাউনের নবাবপুর মোড় থেকে রেকজোয়ানি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ২ কিমি রাস্তা মেরামতির পরে কাজ থমকে গিয়েছে। বাকি রাস্তা গর্তে ভরা। বর্ষার জল জমে রয়েছে। রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির নব নির্বাচিত প্রতিনিধি তৃণমূলের প্রবীর কর বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির স্কিম অনুযায়ী হিডকো রাস্তাটির মেরামতি শুরু করেছে। বর্ষার জন্য কাজ আটকে আছে। বর্ষার পরেই আবার কাজ শুরু হবে।” রাজাহাটের বিডিও তথা রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির এগ্জিকিউটিভ অফিসার অমলেন্দু সমাদ্দার বলেন, “রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। রোগীদের সমস্যা হচ্ছে। হিডকো একটি অংশের কাজ করেছে। দ্রুত বাকি অংশের কাজ করে দেওয়ার জন্য হিডকোকে অনুরোধ করব।”
|