|
|
|
|
|
|
|
আপনার সাহায্যে... |
|
রাত্তিরে বুকে ব্যথা
গ্যাস্ট্রিক ভেবে মোটেই অগ্রাহ্য করবেন না। হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
ডা. পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বললেন রুমি গঙ্গোপাধ্যায়। |
|
|
প্র: মাঝরাতে হঠাৎ বুকে ব্যথা। হাতের কাছে কার্ডিয়োলজিস্ট নেই। সেই মুহূর্তে কী করব?
উ: বুকে ব্যথা মানেই হার্টের সমস্যা নয়। তাই বলে অম্বলের ওষুধ খাইয়েও শুইয়ে রাখবেন না। সত্যি সত্যি হার্টের সমস্যা হলে ফেলে রাখলে মুশকিল।
প্র: সমস্যাটা যে হার্টের বুঝব কী করে?
উ: বুকে চাপ চাপ ব্যথা হবে, মনে হতে পারে বুকের ওপর কিছু চেপে বসে আছে, সঙ্গে বমি বমি ভাব লাগতে পারে, ঘামও হতে পারে। ঘাড়, বাঁ হাত, চোয়াল বা গলায়ও ব্যথা হতে পারে।
প্র: সে অবস্থায় কী করব?
উ: জিভের তলায় সরবিট্রেট ও অ্যান্টাসিড সহ অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ দেবেন। তাড়াতাড়ি ইসিজি করাতে পারলে ভাল। নইলে হাসপাতাল। কমবয়সি ছেলেদের এ রকম হলে সময় নষ্ট না করে চটজলদি কার্ডিয়ো ইউনিট আছে, কাছাকাছি এমন কোনও হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্র: কিন্তু ডায়বেটিস থাকলে তো শুনেছি এ সব ব্যথার কিছুই টের পাওয়া যায় না?
উ: হ্যাঁ। ডায়বেটিস রোগীকে যদি দেখেন, হঠাৎ ঘামতে শুরু করেছে বা শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, তবে তাড়াতাড়ি ইসিজি করা উচিত। আগে থেকেই হার্টের সমস্যা থাকলে চটজলদি হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্র: সুগার কমে গিয়েও তো এমনটা হতে পারে?
উ: সুগার কমে গেলেও ঘাম হবে। মনে হবে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি। জিভটা শুকনো লাগে। বাড়িতে সুগার মাপার যন্ত্র থাকলে দেখে নিতে পারেন সত্যিই সুগার কমেছে কি না। চিনি বা গ্লুকোজ-জল অল্প অল্প করে দিন।
প্র: হঠাৎ অজ্ঞান হলে কী করব?
উ: রোগীকে শুইয়ে দেবেন। কাঁধ সামান্য ঝাঁকিয়ে বা চোখেমুখে জলের ছিটে দিয়ে দেখবেন জ্ঞান ফেরে কি না। না ফিরলে দেখুন শ্বাসপ্রশ্বাস আর পালস চলছে কি না। মনে রাখবেন এ ক্ষেত্রে সময় খুব জরুরি। |
|
প্র: যদি দু’টোই না চলে?
উ: সে ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। যত ক্ষণ না যাচ্ছেন, রোগীকে সিপিআর (বেসিক লাইফ সাপোর্ট) দিয়ে যেতে হবে। চিত করে শুইয়ে মাথাটা সামান্য পেছনে হেলিয়ে দেবেন। এর পর মুখ খুলে দেখবেন ভেতরে লালা বা কফ আটকে আছে কি না, বা জিভটা উল্টে আছে কি না। থাকলে আঙুল দিয়ে তা বের করে আনবেন। তার পর রোগীকে কার্ডিয়াক মাসাজ ও মাউথ টু মাউথ ব্রিদিং দিতে হবে। তবে আনাড়ি হাতে নয়।
প্র: হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট শুরু হল। কী করব?
উ: বদ্ধ জায়গায় শ্বাসকষ্ট হলে তাড়াতাড়ি রোগীকে খোলা কোনও জায়গায় নিয়ে এসে শুইয়ে বা বসিয়ে দিন। হাঁপানির রোগীর ক্ষেত্রে সঠিক নেবুলাইজার বা ইনহেলার দিলে সাময়িক আরাম মিলবে।
প্র: বুক ধড়ফড় করলে?
উ: টেনশন করলে বা বেশি কফি খেলে বুক ধড়ফড় করতে পারে। আবার ইনহেলারের মাত্রা বেশি হলেও বুক ধড়ফড় করতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়ুন। গাড়ি চালাতে চালাতে এ রকম হলে সাইড করে দাঁড়িয়ে পড়ুন। কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে গলার ধারে একটি বিশেষ জায়গায় (ক্যারোটিড সাইনাস) মাসাজ করলে কমে যেতে পারে। মাঝে মধ্যে এমন হলে ডাক্তারের কাছ থেকে এই মাসাজের পদ্ধতিটা শিখে নিন।
প্র: বয়স্করা অনেক সময় উঠে দাঁড়ালে টাল খেয়ে পড়ে যান। বিশেষ করে রাত-বিরেতে। কী করতে হবে তখন?
উ: হুট করে প্রেসার কমে গিয়ে এমনটা হয়। যদি দেখেন রক্তচাপ কমে গেছে, তবে রোগীকে মাথা ও পা এক লেভেলে করে বালিশ ছাড়া শুইয়ে দেবেন। নুন-চিনির জল খেতে দিন।
প্র: হঠাৎ করে শরীরের কোনও দিক অবশ লাগলে?
উ: স্ট্রোকের পূর্বাভাস হতে পারে। তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। বাড়িতে নিজেরা কোনও ওষুধ দেবেন না।
প্র: খিঁচুনি শুরু হলে কী করব?
উ: প্রথমেই পাশ ফিরিয়ে শুইয়ে দিন। যাতে জিভ দিয়ে শ্বাসনালি আটকে না যায়। জিভ যাতে না কামড়ে ফেলে তার জন্য দুই পাটি দাঁতের মধ্যে টিথ গার্ড বা প্লাস্টিকের চামচ দিতে পারেন। খিঁচুনি না কমলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।
প্র: গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা হঠাৎ শুরু হলে খুব কষ্ট হয়। সেই মুহূর্তে কী করব?
উ: অ্যান্টাসিড খাবেন। তবে পেটের ওপরের অংশের সব ব্যথাই গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা নয়।
প্র: বাইরে খেয়ে এসে রাতে হঠাৎ বমি-পায়খানা?
উ: ওআরএস খেয়ে যান। প্রথমেই অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। প্রস্রাব খুব কমে গেলে স্যালাইন দিতে হবে।
|
|
বাড়ির কাছাকাছি কোন হাসপাতালে জরুরি বিভাগ আছে, তা জেনে রাখুন। |
সিপিআর বা বেসিক লাইফ সাপোর্ট দেওয়ার পদ্ধতি শিখে রাখুন। বেসিক লাইফ সাপোর্ট দিতে হবে মুহূর্তের মধ্যে। সময়টা এ ক্ষেত্রে খুব জরুরি। |
হার্ট ফেলিওর বা কিডনির রোগীর শরীরে জল জমে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সে ক্ষেত্রে রোগীকে শুইয়ে না দিয়ে বসিয়ে দিলে ভাল হয়। |
বুক ধড়ফড়ের সমস্যা থাকলে এড়িয়ে চলুন কফি বা কোকের মতো ক্যাফিন জাতীয় জিনিস। |
প্রেসার বা সুগারের সমস্যা থাকলে বাড়িতে এই দুটি মাপার যন্ত্র রাখা খুব জরুরি। |
|
যোগাযোগ- ৯৮৩৬০৪৫৫৫৮ |
|
|
|
|
|