|
|
|
|
নেট-জালে জড়সড় মায়াবতী ও মুলায়ম, ব্যতিক্রম মমতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি-কংগ্রেস সাইবার-যুদ্ধ জমে উঠলেও আঞ্চলিক রাজনীতিতে কিন্তু এখনও মোটের উপর ব্রাত্য আধুনিক প্রযুক্তি।
তামিলনাড়ুতে যুযুধান দুই দল, ডিএমকে এবং এডিএমকে আটকে রয়েছে আকাশছোঁয়া কাট আউটে। উত্তরপ্রদেশে মায়াবতী বা মুলায়ম কেউই নেট-দুনিয়ায় নেই। ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক বা বিহারের নীতীশ কুমার, লালু প্রসাদও সেই পথের শরিক। ব্যতিক্রম বলতে পশ্চিমবঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ফেসবুকে বেশ সড়গড়। রাজনীতির বহু বিষয়ে সেখানেই মতামত দেন তিনি। তৃণমূলের নিজস্ব ওয়েব সাইটও রয়েছে। পিছিয়ে নেই বামেরাও। দলীয় ওয়েব সাইটের পাশাপাশি ফেসবুক, টুইটারে বেশ সক্রিয় অনেক বাম নেতাই।
নির্বাচন কমিশনের মাপকাঠি অনুযায়ী জাতীয় দল ছ’টি কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম, এনসিপি, সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবের নিরিখে প্রকৃত জাতীয় দলের মান্যতা পায় কংগ্রেস আর বিজেপি-ই। এই দু’টি দলই সোশ্যাল মিডিয়াকে নিত্য নতুন ভাবে ব্যবহার করে চলেছে। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রচারে এক অভিনব ওয়েবসাইট ‘ফেকুএক্সপ্রেস ডট কম’ খুলে বসেছে কংগ্রেস। এই অনলাইন খেলায় মোদীর ‘মিথ্যা’ বক্তব্যগুলি ঠিকমতো বলতে পারলে পুরস্কার মিলবে শাহরুখ খানের ছবির টিকিট!
সোস্যাল সাইটে নামতে লালু প্রসাদ, মুলায়ম সিংহ, মায়াবতী, জয়ললিতাদের অনীহা কেন? সমাজ-মনস্তত্ত্ববিদ আশিস নন্দীর কথায়, “সর্বভারতীয় বড় রাজনৈতিক দলকে ভাষা, সংস্কৃতি, সমাজের বিভিন্ন গণ্ডি পার হতে হয়। আর সেই কাজে কিছু দিন আগেও সিনেমা অথবা ক্রীড়াজগত থেকে প্রচারের জন্য মুখ খোঁজা হত। সেই ঝোঁকটা এখন কিছু কমলেও বেড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার দাপট।” আশিসবাবুর মতে, আঞ্চলিক দলগুলির এত বড় ক্ষেত্র লাগে না। লালু বা মুলায়ম তো দেহাতি ঢঙে নিজেদের ভোট ব্যাঙ্কের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে নেন। নেট-প্রচারের থেকে উত্তরপ্রদেশ, বিহার অথবা তামিলনাড়ুর গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছতে সেটা অনেক বেশি কার্যকরী।
সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, এই নতুন মাধ্যমে তাঁদের সক্রিয়তা যথেষ্ট। তবে ডিএমকে-র মুখপাত্র বসন্ত স্ট্যানলির বক্তব্য, টিভি চ্যানেলের প্রভাব এখনও অনেক বেশি। তাঁর কথায়, “শুধু ডিএমকে-এডিএমকে নয়, তামিলনাড়ুর প্রত্যেকটি ছোট-বড় দলের নিজস্ব নিউজ চ্যানেল রয়েছে।” আর রয়েছে তামিল নেতা-নেত্রীদের জাম্বো মাপের কাট-আউট।
কিন্তু তৃণমূল? ফেসবুকে মমতা মতামত দিলেই জোরদার বিতর্ক তৈরি হয়। তৃণমূলের ‘টেকি’ সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ানের টুইট-ও বেশ জনপ্রিয়। এমনও ঘটেছে, সংসদে সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলার সঙ্গে সঙ্গেই তা উঠে এসেছে ডেরেকের টুইটে। বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই উৎসাহী মানুষ জেনে গিয়েছেন দলের অবস্থান। ডেরেকের কথায়, “মমতা বলেন, মানুষের সঙ্গে ৩৬০ ডিগ্রি কমিউনিকেশন গড়তে হবে।”
কী এই ‘৩৬০ ডিগ্রি কমিউনিকেশন’? ডেরেকের ব্যাখ্যা, “মিছিল, জনসভা, বৈঠক এ সব তো রয়েছেই। সমান জোর দিতে হবে, ওয়েবসাইট, টুইটার, ফেসবুকেও। নেত্রী বলেন, এটাই মানুষের সঙ্গে ৩৬০ ডিগ্রি যোগাযোগ।” তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন, সোশ্যাল সাইট এমন একটা মঞ্চ, যেখানে শুধু বলা নয়, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মানুষের কথা শোনাও সম্ভব। |
|
|
|
|
|