|
|
|
|
লোকসভায় উতরোতে কেরলই ভরসা কারাটদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ইউপিএ ও এনডিএ-র শক্তি কমায় আসন্ন ভোটে অ-কংগ্রেস অ-বিজেপি জোট-সরকার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দেখছে সিপিএম। সেই জোটে চালিকা শক্তির ভূমিকা নিতে অন্তত ৩৫টি আসন পেতে হবে বলে মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু তার জন্যও পশ্চিমবঙ্গ নয়, কেরলই ভরসা পলিটব্যুরো আর কেন্দ্রীয় কমিটির। কারণ পশ্চিমবঙ্গে এখনও সংগঠনের অবস্থা করুণ। তেমন কোনও জেরদার আন্দোলন সে জন্য গড়া যায়নি। মানুষের আস্থাও যে ফেরেনি, সাম্প্রতিক বেশ কিছু নির্বাচনে তা স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে আসন বাড়া তো দূরের কথা, এখনকার ১৫টি আসন ধরে রাখাটাই কঠিন হবে বলে মনে করছে সিপিএম নেতৃত্ব। কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট হওয়াটাও একটা বড় শর্ত পশ্চিমবঙ্গে। বাম শিবিরে আশঙ্কা, জোট হলে পশ্চিমবঙ্গে এখনকার আসনও ধরে রাখতে পারবে না বামেরা।
লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল এবং প্রস্তুতির রূপরেখা তৈরি করতে আজ থেকে দিল্লিতে সিপিএমের তিন দিনের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে। সেই বৈঠকে বাম শাসিত তিন রাজ্যের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গিয়ে সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গে এখনও অনেক সাংগঠনিক কাজ বাকি। মানুষের মধ্যে আস্থা ফেরাতেও অনেক কাজ করতে হবে। ‘মমতার সম্পর্কে রাজ্যবাসীর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে’ শুধু এই আশায় বসে থাকলে চলবে না। দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সকলেই প্রকাশ কারাটদের জানিয়ে দিয়েছেন, এর কোনও শর্ট-কাট নেই। তৃণমূল যদি হিংসা চালায়, তা প্রতিরোধ করার উপযোগী সাংগঠনিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে। সেই সঙ্গে জনসমর্থন ফিরে পেতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে ৩৫টি আসন পেতে কেরলই একমাত্র ভরসা প্রকাশ কারাটদের। গত লোকসভা নির্বাচনে কেরলের মাত্র ৪টি আসনে জিতেছিল বামেরা। এ বার কেরলের ২০টি আসন জেতার লক্ষ্যে ঝাঁপাতে চাইছে সিপিএম। কেবল তা হলেই গোটা দেশে সিপিএম ও অন্য তিনটি বাম দল মিলে ৩৫টি আসনের কাছাকাছি পৌঁছনো সম্ভব। কারণ ত্রিপুরায় সিপিএমের পরিস্থিতি ভাল হলেও সেখানে লোকসভা আসন মাত্র দু’টি। বাকি থাকে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে এখনকার ১৫টি আসন ধরে রাখাটাই বামেদের পক্ষে কঠিন কাজ হবে বলে সিপিএম নেতৃত্বের মত। কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট হলে এই আসনও ধরে রাখা দায় হবে। তবে জোট না হলে ভোট ভাগাভাগিতে ফল ভাল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কেরল ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে এই পার্থক্য কেন? পলিটব্যুরোর নেতারা বলছেন, দুই রাজ্যে বামেরা একই সময়ের ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল। কিন্তু কেরলে বামেরা পর দিন থেকেই উম্মেন চান্ডির সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে পড়েছিল। এখনও রাস্তায় নেমে সেই আন্দোলন চলছে। সৌর কেলেঙ্কারির তদন্ত ও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে চান্ডির পদত্যাগের দাবিতে সচিবালয় অবরোধ হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে পরিস্থিতি ভিন্ন। কতখানি আন্দোলন হবে, কতখানি সরকার-বিরোধিতা হবে, আন্দোলনে নামার মতো সাংগঠনিক শক্তি রয়েছে কি না, সেই সব প্রশ্নেরই এখনও সমাধান হয়নি। তাই মমতা-সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যু থাকলেও তাকে কাজে লাগানো যায়নি। অগত্যা কেরলই ভরসা এ কে গোপালন ভবনের। |
|
|
|
|
|