কিছুক্ষণ ধরে ছোট্ট মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। বহু ডাকাডাকিতেও সাড়া নেই। কোনও ঘরে খুঁজে না পেয়ে শেষে বাথরুমে গিয়ে মা দেখলেন, জলভর্তি গামলায় উল্টে পড়ে রয়েছে দেড় বছরের মেয়ে। শরীরে সাড় নেই। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনাটি ঘটেছে কালীঘাট থানা এলাকার শাঁখারিপাড়া রোডের একটি ফ্ল্যাটে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বিভি ঝা নামে ওই শিশুটির ফুসফুসে প্রচুর জল পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, বিভিদের বাড়ির বাথরুমের গামলাটি দেড় ফুটের মতো গভীর। সেটি প্রায় জলভর্তি ছিল। পুলিশের অনুমান, ছোট্ট শিশুটি কোনও ভাবে উল্টে পড়ে যায় ওই গামলায়। তার মাথা জলে ডুবে যায়। তার ফলেই দমবন্ধ হয়ে মারা যায় সে। তার মা পুলিশকে জানান, এত অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর দেড় বছরের মেয়ে চোখের আড়ালে চলে গিয়ে যে এ রকম একটা কাণ্ড ঘটাবে তা ভাবতেই পারেননি তিনি।
শিশুটির বাবা সুনীলকুমার ঝা একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। শাঁখারিপাড়া রোডের একটি আবাসনের দোতলার ফ্ল্যাটে সপরিবার থাকেন তিনি। তাঁর দাদাও সপরিবার ওই ফ্ল্যাটেই থাকেন। বিভি সুনীলবাবুদের একমাত্র মেয়ে। ঘটনার সময়ে অবশ্য সুনীলবাবু বাড়িতে ছিলেন না। ছিলেন বিভির মা, তাঁর জা এবং জায়ের সন্তান। শুক্রবার সুনীলবাবু বলেন, “বিভির মা কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।” ওই আবাসনেরই এক বাসিন্দা মিনতি বসু বলেন, “সন্ধ্যাবেলা হঠাৎ উপরের ঘরে কান্নাকাটির আওয়াজ পেলাম। দেখলাম দেড় বছরের বাচ্চাটাকে সিঁড়ি দিয়ে কোলে করে নামানো হচ্ছে।”
প্রতিবেশীরা জানালেন, দেড় বছরের বিভি যে খুব দুষ্টু ছিল তা নয়। প্রতিবেশী তপন নাথ বলেন, “ওই পরিবার খুব বেশি দিন এই পাড়ায় আসেনি। বিভিকে নিয়ে ওর মা খুব একটা বেরোতেন না। সব সময়ে চোখে-চোখেই রাখত। তবু কী ভাবে কী হয়ে গেল, বুঝতেই পারছি না।” |