বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী পঞ্চায়েতেও প্রধান নির্বাচন নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। শেষে ‘স্টিয়ারিং কমিটি’ গড়ে, গড়বড় বুঝলে তিন মাসের মধ্যে বোর্ড ভেঙে দেওয়ার হুমকি-সহ প্রধান নির্বাচিত হল কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েতে।
কাঁকসা ব্লকের ৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে কাঁকসা ও ত্রিলোকচন্দ্রপুর বাদে এ বার সবকটিতেই জিতেছে তৃণমূল। তার মধ্যে বিদবিহারে বামফ্রন্টের কোনও প্রার্থী না থাকায় ১২টি আসনের সবগুলিই পেয়েছে তারা। অথচ শুক্রবার প্রধান কে হবে তা নিয়ে বিবাদ বেধে যায় তৃণমূলেরই দু’তরফের মধ্যে। তৃণমূলের এক সূত্রের খবর, দলের বিদবিহার অঞ্চল সভাপতি সুকুমার পাল প্রধান হিসেবে মধু রুইদাসের নাম প্রস্তাব করেন। মধুবাবু গত ১০ বছর ধরে পঞ্চায়েতের সদস্য। সুকুমারবাবুর দাবি, সিপিএমের চাপে এতদিন মানুষের জন্য কাজ করতে পারেননি মধুবাবু। এবার প্রধান হয়ে তা পুষিয়ে দেবেন। কিন্তু অন্য তরফ থেকে প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হয় নিখিল ডোমকে। জানা গিয়েছে, নিখিলবাবুকে প্রধান করার পিছনে প্রধান কারিগর তৃণমূলের দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল কমিটির সম্পাদক তথা কাঁকসা ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি দেবদাস বক্সী। কিন্তু সুকুমারবাবু এর প্রতিবাদ করেন। তাঁর দাবি, “গত পঞ্চায়েত ভোটেও নিখিলবাবু তাঁর ভাই সিপিএম প্রার্থী দীপক ডোমের সঙ্গে ছিলেন। সেখানে মধুবাবু প্রথম থেকেই দলে রয়েছেন।”
ভোটাভুটি শুরু হতেই দু’পক্ষের বিবাদ বেধে যায়। নির্বাচন ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হলে সমাধানসূত্র হিসেবে স্টিয়ারিং কমিটি গড়ার প্রস্তাব নেওয়া হয়। তৃণমূলের এক সূত্রের খবর, সুকুমারবাবুকে মাথায় রেখে পাঁচ সদস্যের একটি স্টিয়ারিং কমিটি গড়া হয়েছে। সেই কমিটি পঞ্চায়েতের কাজের দেখভাল করবে।
সুকুমারবাবু জানান, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রধান নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অশান্তি এড়াতে নিখিল ডোমকে মেনে নিয়েছি। মধু রুইদাসকে উপপ্রধান করা হয়েছে। তিনি বলেন, “তিন মাস দেখব। ভাল কাজ হলে সমস্যা নেই। কিন্তু নড়চড় হলে ছাড়ব না। দলের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব।”
তবে দেবদাসবাবু প্রধান নির্বাচন নিয়ে বিবাদের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “দলের উচ্চতর নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই নিখিল ডোমকে প্রধান এবং মধু রুইদাসকে উপপ্রধান করা হয়েছে।” তাঁর দাবি, বাসুদেবপুর এলাকায় সিপিএমের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসাবেই নিখিলবাবুকে প্রধান নির্বাচিত করা হয়েছে। স্টিয়ারিং কমিটি গড়া হয়েছে প্রধান ও উপ-প্রধানকে পঞ্চায়েত পরিচালনার কাজে সাহায্য করবার জন্য। নজরদারির প্রশ্নই নেই। |