|
|
|
|
|
বিপণনের কেরামতিতে
নয়া বাজার ১৫ অগস্ট
গার্গী গুহঠাকুরতা • কলকাতা |
|
পনেরো অগস্টের সকাল যদি জাতীয় পতাকা তোলার হয়, তবে তার দুপুর আর সন্ধ্যে প্রাণভরে ‘শপিং’-এর!
ছেষট্টি পূর্ণ করা স্বাধীনতা দিবস এখন আর শুধু লালকেল্লার ভাষণ, মাইকে দেশাত্মবোধক গান কিংবা স্কুল-অফিসের ছুটি নয়। বরং এই দিনকে ঘিরে উৎসবের মেজাজ এখন অধিকাংশ সংস্থার বিজ্ঞাপনের লক্ষ্য। বিপণনের হাতিয়ার। এবং এই দু’য়ের কৌশলে তৈরি হওয়া বড়সড় বাজারও।
বিপণন বিশেষজ্ঞদের মতে, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি উৎসবের ভরা মরসুমের এই চার মাসে অধিকাংশ পণ্যেরই বিক্রিবাটা হয় সব থেকে বেশি। এর পর কেনাকাটা কিছুটা কমলেও, বাজারকে মোটামুটি চাঙ্গা রাখে মার্চে দোল, এপ্রিলের নববর্ষ কিংবা মে মাসের গরমের ছুটি। কিন্তু এর পর জুন-জুলাইয়ে প্রায় তলানিতে ঠেকে চাহিদা। সেই বাজারকে চাঙ্গা করে কার্যত উৎসবের মরসুমের জন্য গা-ঘামানো শুরু করে দিতে এখন স্বাধীনতা দিবসের কেনাকাটা বড় ভূমিকা নিচ্ছে বলে দাবি তাঁদের।
সেই কারণেই এই বিশেষ দিনটিকে কেন্দ্র করে সপ্তাহভর ক্রেতা টানতে এখন হরেক বিজ্ঞাপনের হাতছানি। গাড়ি থেকে শুরু করে মোবাইল প্রায় সর্বত্র মোটা ছাড়ের টোপ। সাশ্রয়ের সুযোগও।
যেমন, এ বছরই ৬৬ পূর্ণ করা স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ৬৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে একটি গাড়ি সংস্থা। স্বাধীনতা প্রাপ্তির ১৯৪৭ সালকে কুর্নিশ জানিয়ে ১৯৪৭ টাকাই ছাড় দিচ্ছে একটি বিউটি সালো। টেলিভিশন, হোম থিয়েটার, ল্যাপটপ, মোবাইলের মতো বৈদ্যুতিন পণ্য থেকে শুরু করে জামা-কাপড়, চাল-ডাল তেল-নুন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে তৈরি বাজার ধরতে পিছিয়ে নেই কেউই। এমনকী নিজেদের নয়া পণ্য বাজারে আনতে এই বিশেষ দিনকে বেছেছে একটি ডেয়ারি সংস্থাও।
বিপণন বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই এই বাজার তৈরি করা হয়েছে একটু একটু করে। নিছক আবেগ নয়। পুরোদস্তুর লাভের অঙ্ক কষেই ১৫ অগস্টকে ঘিরে বিপণন কৌশল ঠিক করেছে গাড়ি সংস্থা থেকে শুরু করে শপিং মল, সকলেই। ঠিক যে ভাবে যত্ন নিয়ে ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র বাজার তৈরি করেছেন বিভিন্ন সংস্থার বিপণন বিভাগ। যাতে কখনওই লম্বা সময়ের জন্য বাজারে চাহিদায় ছেদ না-পড়ে।
আইআইএম ক্যালকাটার বিপণনের (মার্কেটিং) অধ্যাপক কৃশানু রক্ষিত বলেন, “এই সময়ে সাধারণত ব্যবসায় ভাটা যায়। কারণ, পরের উৎসব আসতে এখনও মাসখানেক দেরি। তাই এটা কার্যত সেই শূন্যস্থান পূরণ করে। ঠিক যেমনটা করে ভ্যালেন্টাইন্স ডে। তা ছাড়া, স্বাধীনতা দিবস আপামর জনতার উৎসব। ফলে ক্রেতার সংখ্যাও যথেষ্ট বেশি।”
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সপ্তাহভর ছাড় ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার টানে এই সময় বিক্রি বাড়ে প্রায় ১০০%। এই সময়ে ছাড় চালুর ক্ষেত্রে পথিকৃৎ বলা যেতে পারে বিগ বাজারকে। সেই সংস্থার পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা মণীশ অগ্রবাল জানান, প্রতি বছর এই বাজার বাড়ছে। অন্য সময়ের তুলনায় এই সপ্তাহে তিন গুণ ব্যবসা বাড়ে বলে তাঁর দাবি। এক বৈদ্যুতিন পণ্য সংস্থার সংগঠিত খুচরো ব্যবসার দায়িত্বে থাকা তুষার দাসের মতে, বর্ষায় নেতিয়ে পড়া বাজার চাঙ্গা করতে এই বিপণন কৌশল গুরুত্বপূর্ণ। |
|
|
|
|
|