এটিএম কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে তক্কে তক্কে থাকত যুবক। বয়স্ক কোনও গ্রাহক কাউন্টারে ঢুকবেন বুঝতে পারলেই তার আগে ঢুকে বিশেষ কায়দায় এটিএমের বোতাম বিকল করে বেরিয়ে আবার অপেক্ষা। গ্রাহক টাকা তুলতে সমস্যায় পড়লে সাহায্য করার নামে ভিতরে ঢুকে হাতসাফাই করে টাকা নিয়ে চম্পট। এটিএমে জালিয়াতির অভিযোগে কুলটি থেকে ধৃত যুবককে জেরা করে এমনই তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি পুলিশের।
মঙ্গলবার কুলটি নিউ রোডে এক এটিএম কাউন্টারে অজিত দত্ত নামে এক গ্রাহকের সন্দেহ হয়, সহযোগিতা করার নামে ওই যুবক তাঁর টাকা সরাচ্ছে। তিনি তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে লোকজন জড়ো হয়। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় মহম্মদ আজম খান নামে ওই যুবককে। এডিসিপি (পশ্চিম) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ধৃতকে বুধবার আসানসোল আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল-হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কুলটির ওই এটিএম কাউন্টারে রক্ষী মোতায়েন করেছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধৃতকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করা হয়। তখনই সে জানায়, এর আগেও বার তিনেক ওই এটিএম কাউন্টারে জালিয়াতি করেছে। কী ভাবে হাতসাফাই করত সে? পুলিশের দাবি, ধৃত জানিয়েছে, অপেক্ষাকৃত ফাঁকা সময়ে সে এটিএম কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকত। গ্রাহক কাউন্টারে ঢোকার আগে সে ভিতরে গিয়ে এটিএমের সংখ্যা চিহ্নিত বোতামগুলির একটিতে সরু পিন ঢুকিয়ে দিত। ফলে, সেই বোতাম আর ওঠা-নামা করত না। কাজ করত না এটিএম-ও। গ্রাহক কাউন্টারে ঢুকে সমস্যায় পড়লে সে আবার ভিতরে ঢুকে সাহায্যের নাম করে টাকা তুলে নিয়ে চম্পট দিত।
এটিএম কাউন্টারে জালিয়াতির ঘটনা আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে নতুন নয়। এর আগেও চিনাকুড়ি এলাকায় এক এটিএম কাউন্টারে তিন বার, রাধানগর এলাকার একটি এটিএমে দু’বার এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকেরা পুলিশ ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে সে ব্যাপারে অভিযোগও জানিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, সেই সব ঘটনার তদন্তও করেছে পুলিশ। কিন্তু দুষ্কৃতী ধরা পড়েনি।
চিনাকুড়ি ও রাধানগর এলাকার এটিএমে গ্রাহকদের টাকা জালিয়াতির ঘটনায় কুলটির ওই ধৃত যুবকের কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। |