নিকাশি খালের উপর মাটির বস্তা ফেলে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল মাস তিনেক আগে। এর জেরে অতিরিক্ত জলও বেরোতে পারেনি। স্বভাবতই ক’দিনের টানা বর্ষায় জমা জলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার ১, ২, মগরাহাট ১, ২, কুলপি, মন্দিরবাজার, রায়দিঘি, মথুরাপুর ১, ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষিজমির। বীজতলা থেকে ইতিমধ্যেই রোপণ করা বীজের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। ক্ষতিপূরণের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
ডায়মন্ডহারবারের সরিষা থেকে সোনামুখী গ্রাম হয়ে হুগলি নদীতে জল নিকাশির জন্য প্রায় ১০ কিলোমিটার লম্বা কামারপোল খাল রয়েছে। বর্ষায় ডায়মণ্ডহারবার ১ ব্লকের হরিদেবপুর, সন্তোষপুর, দরিকৃষ্ণনগর, মোহনপুর, পারুলিয়া, জয়দেবপুর ও ডায়মন্ডহারবার ২ ব্লকের কামারপোল, রেখা, গোবিন্দপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষিজমির জল নিকাশি হয়। এ বছর বর্ষার আগে সেচ দফতর ওই খালের উপর গড়খালি ও সোনামুখীর সংযোগকারী পাকা সেতু তৈরির কাজ শুরু করে। নিকাশি খাল আটকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। |
৬ অগস্ট থেকে টানা তিন চার দিন বৃষ্টির জেরে ওই এলাকায় কয়েক হাজার বিঘা কৃষিজমি, সব্জি খেত জলে ডুবে যায়। বেশ কিছু মাছ চাষের পুকুর জলে ডুবে যায়। মাটির ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৯ অগস্ট নিকাশি খালের উপর থেকে মাটির বস্তা তোলার দাবিতে হরিপুর-মল্লিকপাড়ার মোড়ে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও সেখানে গিয়েছিলেন। তারা নিকাশি খাল থেকে মাটির বস্তা তোলার সিদ্ধান্তও নেন।
কিন্তু মাটির বস্তা তুলে ফেললেও প্রায় দু’তিন দিন জলের তলায় জমি থাকায় ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বীজতলা বা রোপণ করা বীজ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ১০ থেকে ১৫ হাজার বিঘা কৃষিজমি এখনও জলের তলায়। স্থানীয় বাসিন্দা সামসুদ্দিন মল্লিক, আজিজুল গায়েনদের ক্ষোভ, “সময় মতো নিকাশি খালের উপর থেকে বস্তাগুলি তুলে নেওয়া হলে এতটা ক্ষতি হত না। বীজ তলা পুরোপুরি পচে গিয়েছে। এখন জল নেমে গেলেও নতুন করে চাষ করা যাবে না। সেচ দফতরের গাফিলতিতে আমাদের এই সর্বনাশ হল। আমরা ক্ষতিপূরণের জন্য সেচ দফতরকে বলেছি।”
মহকুমা সেচ দফতরের সহকারি বাস্তুকার প্রদীপ হালদার বলেন, “সেতু তৈরি করতে গিয়ে জল আটকানোর জন্য খালে মাটির বস্তা ফেলা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। বাসিন্দাদের কথা ভেবে নিকাশির ব্যবস্থা করা হয়েছে।” ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “টানা বৃষ্টির জন্য এই ঘটনা। তবু বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।” |