উদ্বোধনের ছয় মাসের মধ্যেই বালুরঘাটের ‘সিটি ক্লক’ এবং ‘টয় ট্রেন’ বিকল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সাংসদ কোটার প্রায় ২২ লক্ষ টাকা খরচ করে পুরসভার উদ্যোগে বসানো ঘড়ি এবং টয়ট্রেন উদ্বোধনের পরেই বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে আরএসপি পরিচালিত বালুরঘাট পুর কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বালুরঘাট পুরসভায় প্রশাসক বসানো হয়েছে। প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘড়ি ও ট্রয়ট্রেন মেরামতির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”
গত মার্চ মাসে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ট্রাফিক মোড়ে একটি ঘড়ি এবং সাহেবকাছারি পার্কে টয় ট্রেন পরিষেবার উদ্বোধন করা হয়। কংক্রিটের স্তম্ভ তৈরি করে ঘড়ি বসানো হয়। খরচ হয় প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। চেন্নাই থেকে কিনে আনা ঘড়িটি প্রতি ঘন্টায় ঢং ঢং শব্দে সময় জানান দিত। |
অচল সিটি ক্লক। বালুরঘাটে সোমবার ছবিটি তুলেছেন অমিত মোহান্ত। |
উদ্বোধনের পরেই ঘড়িতে আলোর ত্রুটি ধরা পড়ে বলে অভিযোগ। এরপর ঘড়িটি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়ে। গত দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘড়িটি অকেজো হয়ে থাকলেও পুর কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। পাশাপাশি সাহেবকাছারি এলাকার শিশু উদ্যানে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা খরচ করে পুরসভা ট্রয়ট্রেন বসায়। চার কামরার বৈদ্যুতিক ওই খেলনা ট্রেন উদ্যানের চারদিক দিয়ে ঘোরে। ফলে ট্রেনটি অল্প দিনের মধ্যে শিশুদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে পড়ে। গত দু’সপ্তাহ ধরে ট্রয় ট্রেনটি বিকল হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ।
উদ্বোধনের পরে রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি ঘড়ি এবং টয়ট্রেন কেনা নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে পুরসভার বিরোধী দলগুলি। পুর ভোটের মুখে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে বিরোধীরা জানিয়েছে। পুরসভার বিদায়ী চেয়ারপার্সন তথা জেলা আরএসপি নেত্রী সুচেতা বিশ্বাস বলেন, “স্বচ্ছতা বজায় রেখে টেন্ডার করেই ঘড়ি এবং ট্রয় ট্রেন কেনা হয়েছিল। তারের সংযোগ সমস্যার জন্য ঘড়ি ও ট্রয়ট্রেন দুটিই অকেজো হয়ে রয়েছে বলে খবর পেয়েছি। তাছাড়া ওই দুটি জিনিসই কার্যকরী মেয়াদের মধ্যে রয়েছে। তাই মেরামত করতে পুরসভার কোনও খরচ হবে না।” সুচেতাদেবীর পাল্টা দাবি, পুরসভায় বর্তমানে প্রশাসক বসে রয়েছে। তাঁদের হাতে দায়িত্ব থাকলে দ্রুত মেরামত হয়ে যেত।
যদিও তৃণমূলের শহর সভাপতি অসিত রায় অভিযোগ করে বলেন, “বড় অঙ্কের টাকা খরচ করে বসানো ঘড়ি এবং টয় ট্রেন কী করে এত কম সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়, তার উত্তর বিদায়ী পুর কর্তৃপক্ষকেই দিতে হবে। প্রশাসনিক তদন্ত দাবি করছি।” |