জমি ‘জটে’ আটকে মালদহের ৯টি মডেল স্কুল তৈরির কাজ। ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া জেলাগুলিতে মডেল স্কুল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো, রাজ্যে মালদহ জেলাকে বেছে নেওয়া হয়। জেলার ১৩টি ব্লকে একটি করে মডেল স্কুল তৈরির কথা জানায় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ দফতর। প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকার বরাদ্দের প্রতিটি স্কুলের জন্য সাড়ে তিন একর জমি রাজ্যকে খুঁজে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। এক বছর অর্থাত্ ২০১১ সালের মধ্যে চিহ্নিত জমির নথি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ, ওই সময়ের মধ্যে জেলার ১৩টি ব্লকের মধ্যে শুধুমাত্র মানিকচক, পুরাতন মালদহ এবং কালিয়াচক ৩ নম্বর, এই তিনটে ব্লকের জমির নথি কেন্দ্রকে পাঠানো হয়। সে কারণে ওই ৩ ব্লকে স্কুল নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গেলেও বাকি ১০টি স্কুল ঘিরে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, একসঙ্গে সাড়ে তিন একর জমি খুঁজে পেতে কিছুটা সময় চলে যায়। সে কারণে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জমির নথি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো যায়নি। তবে গত বছরের জুন মাসে ৯টি ব্লকের চিহ্নিত জমির নথি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকে স্কুল তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জমিই খুঁজে পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ৯টি ব্লকের জমির নথি ‘সময়মতো’ না পৌঁছোনোয় স্কুল তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়নি। যদিও জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমার বলেন, “৯টি মডেল স্কুল তৈরির জমি চিহ্নিত করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো রয়েছে। স্কুল তৈরির অনুমোদন ও টাকা আসলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করছি।”
রাজ্য সরকারকেই দুষে জেলা সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “জেলা প্রশাসন কিংবা রাজ্য সরকার দেরিতে জমি কাগজপত্র পাঠানোয় মালদহে ৯টি মডেল স্কুলের অনুমোদন থমকে গিয়েছে। একটি ব্লকে নাকি স্কুল তৈরির জমি পাওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসন ও রাজ্য সরকারে ব্যর্থতার জন্য মালদহ বঞ্চিত হচ্ছে। অন্য রাজ্যে কিন্তু মডেল স্কুলে পঠনপাঠনও শুরু হয়ে গিয়েছে।” সাবিত্রী মিত্র বলেন, “ব্লক সদরের কাছাকাছি সাড়ে তিন একর করে জমি পেতে একটু সমস্যা হচ্ছিল। তবে জেলা প্রশাসন জমির নথি পাঠিয়ে দিয়েছি। রাজ্য হয়ে সেই নথি কেন্দ্রের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।”
সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক চিন্ময় সরকার বলেন, “কালিয়াচক ২ ব্লকে মডেল স্কুলের জমি পাওয়া যায়নি। ৯ টি ব্লকের জমির কাগজ পাঠানো হয়েছে।” মডেল স্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলে রেখে পড়ানো হয়। রাজ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওই মডেল স্কুলেই প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পড়ানো হবে। |