গ্রামবাসীদের আন্দোলনের কাছে হার মানল প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা। গুপ্তিপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা রাত ৮টা পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ঘণ্টাদু’য়েকের বেশি সেখানে পরিষেবা পাওয়া যেত না বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন চালু হলে ২৪ ঘণ্টাই পরিষেবা চালু রাখা হবে বলে প্রশাসনের দাবি। স্বাস্থ্য দফতরের ঘোষণায় গ্রামবাসী খুশি।
আশেপাশের অন্তত চার-পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক হাজার মানুষ গুপ্তিপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও মানুষ আসেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পরিষেবা দিনের পর দিন ধরে তলানিতে এসে ঠেকেছে। সারা দিনে দু’এক ঘণ্টার বেশি চিকিৎসক থাকেন না। পুরনো ভবনটিও জীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি মেনে সেই ভবনের পাশেই নতুন একটি ভবন তৈরিও হয়। কথা ছিল, ওই ভবনে অন্তর্বিভাগ চালু করা হবে। ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা মিলবে। যদিও, আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনিক টালবাহানায় সেই ভবনের তালাই খোলা যায়নি। এ নিয়ে পথে নামেন গ্রামবাসীরা। গত ৫ অগস্ট থেকে ওই দাবিতে মঞ্চ বেধে অবস্থান শুরু হয় শাসকদল তৃণমূলের নেতৃত্বে। গ্রামবাসীরাও তাতে যোগ দেন। সোমবার আনন্দবাজার পত্রিকায় এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন।
এ দিনই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তনিমা মণ্ডল লিখিত নির্দেশ দেন, যত দিন জেলা পরিষদের হাত থেকে নতুন ভবন স্বাস্থ্য দফতরকে হস্তান্তর না করা হচ্ছে, তত দিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পরিষেবা দেওয়া হবে। ওই নির্দেশের কথা জেনেই আন্দোলনকারীরা অবস্থান প্রত্যাহার করে নেন। আন্দোলনকারীদের তরফে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সনাতন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা গ্রামবাসীর আন্দোলনের জয়। এ বার নতুন ভবন চালুর দিকে আমরা তাকিয়ে থাকব।” স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল দশায় দুর্ভোগের শেষ নেই হুগলির প্রত্যন্ত এলাকা গুপ্তিপাড়ার মানুষের। কাছাকাছি ভাল হাসপাতাল না থাকায় দূরবর্তী চুঁচুড়া ইমামবাড়া অথবা বর্ধমানের কালনা মহকুমা হাসপাতালে ছুটতে হয় তাঁদের। সেই কারণেই গুপ্তিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবার মানোন্নয়নের দাবিতে গ্রামবাসীরা সরব। তাঁরা আশা করছেন, এ বার অনেকটাই ভাল পরিষেবা পাওয়া যাবে। দিন গুনছেন, কবে চালু হবে নতুন ভবন। |