বন্ধ মেডিক্যাল ভ্যান, চিকিৎসা তিমিরেই
যোধ্যা পাহাড়ের গর্ভবতী মা, প্রসূতি ও নবজাতকদের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে চলে আসত মেডিক্যাল ভ্যান। প্রায় এক বছর ধরে সেই মেডিক্যাল ভ্যানের পরিষেবা হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন ওই প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা।
স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭-’০৮ সাল থেকে ‘রিপ্রোডাক্টিভ চাইল্ড হেল্থ প্রোজেক্ট’-র আওতায় অযোধ্যাপাহাড়ে ওই ভ্রাম্যমান চিকিৎসা পরিষেবা শুরু হয়েছিল। অযোধ্যা পাহাড়ের তিনটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধীনে মোট ৭২টি ছোট ছোট গ্রাম ও টোলা রয়েছে। যেহেতু এই গ্রাম বা টোলাগুলির জনসংখ্যা কম, তাই এক একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর অনেকগুলি গ্রাম বা টোলার বাসিন্দাদের নির্ভর করতে হয়। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা অভিজ্ঞতায় দেখেছিলেন, গর্ভবতী মা, প্রসূতি ও নবজাতকদের টিকাকরণের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের সময়মতো উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় না।
পাহাড়ে নিয়মিত কাজ করে আসা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “টিকাকরণে কর্মসূচির নির্দিষ্ট দিনে স্বাস্থকেন্দ্রে কর্মীরা অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু ওই প্রত্যন্ত এলাকার বাড়ির পুরুষরা জঙ্গলে কাঠ কাটতে কিংবা কাঠ বিক্রি করতে দূরে গিয়েছেন। বাড়িতে পুরুষ না থাকায় ঘরের গর্ভবতী বা নবজাতককে প্রয়োজনীয় টিকা নেওয়ানোর জন্য কেউ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসার লোক নেই। ফলে গুরুত্বপূর্ণ টিকা অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের দেওয়া যেত না।” এই সমস্যা দুর হয়েছিল ওই মেডিক্যাল ভ্যান চালু হওয়ার পরে। ভ্যান নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা সরাসরি গ্রামে গ্রামে গিয়ে টিকা বা প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন দিয়ে আসতে থাকেন।
পাহাড়ের স্বাস্থ্যকর্মীরাই জানিয়েছেন, গত অগস্ট মাস থেকে এই ভ্যানটি তুলে নেওয়া হয়েছে। অযোধ্যা গ্রামের বাসিন্দা হীরালাল লায়া, রুপসিং মুর্মুরা বলেন, “মেডিক্যাল ভ্যানটি থাকায় পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবা সহজে পৌঁছে যাচ্ছিল, কিন্তু আচমকা তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরাও বন্ধ করে দেওয়ার কারণ জানাতে পারেননি।” স্থানীয় অন্য এক বাসিন্দা প্রশান্ত মাহাতো জানান, পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামগুলির দূরত্বও অনেক। রাস্তাও সর্বত্র ভাল নয়, দুর্গমও। এর উপরে রয়েছে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। ওই ভ্যানের দৌলতে গরিব মানুষেরা ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবাটুকু পাচ্ছিলেন। এখন ফের সেই আগের অবস্থাই ফিরে এসেছে। তাঁর মতোই পাহাড়ের অনেকের দাবি, স্বাস্থ্য দফতরের ফের ওই ভ্রাম্যমান স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করা উচিত।
পাহাড়ের এই বিস্তীর্ণ এলাকা বাঘমুণ্ডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধীনে পড়ে। বাঘমুণ্ডির বিএমওএইচ নরেন্দ্রনাথ সোরেন বলেন, “ওই প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে পরিষেবা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কিন্তু ওই ভ্যান চালু থাকায় পাহাড়ের মানুষের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে সুবিধে হত।” তিনি জানান, সমস্যার কথা তিনি ঊর্দ্ধতন কতৃর্র্পক্ষকে জানিয়েছেন। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “অযোধ্যা পাহাড়ে একটি স্বাস্থ্য প্রকল্পে ওই মেডিক্যাল ভ্যানটি চালু ছিল। কিন্তু বরাদ্দ বন্ধ হওয়ায় তা আপাতত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কী ভাবে ফের ওই পরিষেবা চালু করা যায়, আমরা দেখছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.