একটা ফোনই কাল হল!
ভুল লোককে অপহরণ করে পুলিশের জালে ধরা পড়ল সৌগত ঘোষ, সনাতন হালদার এবং সৌরভ দে নামে তিন অপহরণকারী। উদ্ধার পেয়েছেন অপহৃত যুবক, উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মানস বিশ্বাস।
পুলিশ জানায়, দিন কয়েক আগে সংবাদপত্রে ‘কিডনি চাই’ আবেদন করে একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। তা দেখে অপহরণকারীদের মনে হয়েছিল, বিজ্ঞাপনদাতা যথেষ্ট ধনী। তাঁকে অপহরণের ছক কষে ওই তিন জন। বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে ফোন করে কিডনি জোগাড় করে দেওয়ার টোপ দেয় তারা। বলা হয়, রবিবার রাত ৯টা নাগাদ ই এম বাইপাস সংলগ্ন হাইল্যান্ড পার্কের সামনে আসতে। কিন্তু কী করে বিজ্ঞাপনদাতাকে চিনবে অপহরণকারীরা? বলা হয়, ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে ফোন করা হবে। ফোন বেজে উঠলেই চেনা যাবে বিজ্ঞাপনদাতাকে।
এ পর্যন্ত সব কিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু বিপত্তি বাধল ওই ফোন করা নিয়েই। পুলিশের দাবি, যে সময়ে বিজ্ঞাপনদাতাকে ফোন করে অপহরণকারীরা, ঠিক তখনই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা অন্য এক যুবকের ফোন বেজে ওঠে। সেই যুবককেই বিজ্ঞাপনদাতা ধনী ব্যক্তি বলে ভেবে নেয় অপহরণকারীরা। কিছু বোঝার আগেই জোর করে তাঁকে ট্যাক্সিতে তুলে নেওয়া হয়!
ট্যাক্সিতে তোলার সময়ে অভিযুক্তেরা নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন মানস। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে করে নিয়ে যাওয়া হয় বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের একটি লজে। মানস নিজের পরিচয় জানান অপহরণকারীদের। তারা বুঝতে পারে, ভুল লোককে তুলে আনা হয়েছে।
মানস নিতান্তই ছাপোষা মানুষ। এক আইনজীবীর দফতরে কাজ করেন তিনি। মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দেওয়ার মতো আর্থিক অবস্থা নেই তাঁর পরিবারের। কিন্তু একেবারে খালি হাতে না ফিরে মানসের পরিবারের কাছ থেকেই ৩০ হাজার টাকা হাতানোর পরিকল্পনা করে দুষ্কৃতীরা।
দুষ্কৃতীদের নির্দেশ মেনেই মানস মুক্তিপণের কথা জানিয়ে সোমবার সকালে ফোন করেন তাঁর নিয়োগকর্তা আইনজীবীকে। ওই আইনজীবী বিষয়টি জানান পুলিশকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, আইনজীবীর কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে তার টাওয়ারের অবস্থান বার করেন গোয়েন্দারা। তা খতিয়ে দেখে লজটি চিহ্নিত করা হয়। সেখানেই হানা দিয়ে ধরা হয় অপহরণকারীদের। সোমবার ধৃতদের আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাদের ১৭ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। |