বড় শরিক সিপিএম তাদের আসন না-ছাড়ায় উত্তর দিনাজপুরে জেলা পরিষদের নির্বাচনে বামফ্রন্টের ফল খারাপ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলল সিপিআই। রবিবার বিকেলে রায়গঞ্জে সিপিআইয়ের কার্যালয়ে কর্মিসভায় যোগ দিয়ে প্রকাশ্যেই ওই অভিযোগ তুললেন সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে আসন সমঝোতার সময়ে সিপিএম আমাদের কোনও আসন ছাড়েনি। সেই কারণেই জেলা পরিষদের নির্বাচনে বামফ্রন্টের ফল খারাপ হয়েছে। দলীয় শক্তির বিচারে আমাদের ৭ টি আসন ছাড়া উচিত ছিল। অথচ একটি আসনও তারা ছাড়েনি। বড় শরিক সিপিএমের এই স্বেচ্ছাচারিতার জন্য জেলায় সার্বিকভাবে বামফ্রন্টের ক্ষতি হচ্ছে।” তাঁর কথায়, সিপিআই বামফ্রন্টের ক্ষতি চায় না বলেই এর পরেও নির্বাচনে তারা আলাদা করে প্রার্থী দেয়নি।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অপূর্ব পাল শরিক দলের ওই অভিযোগ মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। বামফ্রন্টের বৈঠকে সব শরিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই আসন সমঝোতা হয়েছিল।” জেলা পরিষদের ২৬টি আসনের মধ্যে সিপিএম ২২টি, আরএসপি ৩ টি এবং ফরওয়ার্ড ব্লক একটি আসনে লড়াই করেছে। বামফ্রন্টে দখলে যাওয়া ১৩টি আসনের মধ্যে আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের দখলে যথাক্রমে ১টি এবং ২ টি আসন রয়েছে। কংগ্রেস ৮টি ও তৃণমূল কংগ্রেস ৫ টি আসনে জয়ী হয়েছে। তাতেই জেলা পরিষদের ফল ত্রিশঙ্কু হয়ে পড়েছে। হিমাংশুবাবুর দাবি, সিপিআইকে অন্তত একটি আসন ছাড়া হলেও জেলা পরিষদ বামফ্রন্টই এককভাবে দখল করত।
নির্বাচনের ফল প্রকাশ হতেই ইটাহার ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা হামলা চালাচ্ছে বলে এদিন কর্মিসভায় অভিযোগ তুলল সিপিআই। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পরামর্শ দেন দলের অন্যতম নেতা প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, “শনিবার রাতে ইটাহার ব্লকের সুরুণ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ডামডোলিয়া এলাকায় নাজিমূল হক নামে স্থানীয় এক সিপিআই নেতার মুদিখানা দোকান পুড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ডামডোলিয়া সংসদে সিপিআই প্রার্থী জয়ী হওয়ায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা নাজিমূল হকের দোকানে হামলা চালিয়েছে। পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি।” জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে ইটাহার ব্লকে সিপিআইয়ের ভরাডুবি হওয়ায় মানুষের সভানুভূতি পেতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। |