বেলডাঙা-আমতলা রাজ্য সড়কের ডান দিকে শব্দনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। মূল ভবনের পিছনেই ভগ্নপ্রায় এক ভবন। শ্যাওলা ধরা দেওয়ালে ভাঙা জানালার পাল্লা উধাও হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকদের দেখা মেলে কদাচিৎ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইন্ডোর ব্যবস্থা আজও চালু হয়নি। আউটডোর নামকাওয়াস্তে। সেখানে নিত্য রোগীর চাপ। অথচ চিকিৎসক সংখ্যা অপ্রতুল। তাই উপযুক্ত পরিষেবার কথা ভাবতেও পারেন না স্থানীয় গ্রামবাসীরা। কেদারচাঁদপুর-২, রায়পুর, সর্বাঙ্গপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। তবে, সামান্য জ্বর, পেটের গণ্ডগোল, কাটাছেঁড়ার চিকিৎসা ছাড়া কোনও পরিষেবা মেলে না। |
ঝোপে ঢেকেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভবন।— নিজস্ব চিত্র। |
গত সোমবার স্থানীয় সোনাটিকুরি গ্রামের টুম্পা বিশ্বাস এসেছিলেন তার তিন বছরের সন্তান নিয়ে চিকিৎসা করাতে। কিন্তু ডাক্তারের দেখা না পাওয়ায় ছেলেকে নিয়ে ছুটতে হল ৮ কিলোমিটার দূরের আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে। ত্রিমোহিনী গ্রামের জলি বিবি এক বছর ধরে স্ত্রীরোগে ভুগছেন। বাড়ির পাশের স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়মিত ডাক্তার না আসায় তাঁকে প্রায়ই যেতে হয় ১৫ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে যেতে হয় বেলডাঙা হাসপাতালে।
নওদা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি উত্তম বিশ্বাস বলেন, “হাসপাতালে পরিষেবা বলতে কিছুই নেই। চিকিৎসার দেখা মেলে না। নজরদারি ও মেরামতির অভাবে হাসপাতালের ভবনের আসবাব পত্রের আর বিশেষ কিছু অবশিষ্ট নেই। গত জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ নওদা থেকে জিতেছিলেন। কিন্তু সীমানা প্রাচীর ও ভবন উন্নয়নের টাকা পাশ হলেও কোনও কাজ হয়নি।” প্রাক্তন স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জ্যোৎস্না সেন বলেন, “যে টাকা অনুমোদন হয়েছিল তা সামান্য। তাতে যতটুকু কাজ হয় ততটুকু আমরা করেছি।” স্থানীয় রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ও প্রাক্তন নওদা পঞ্চায়েত সমিতির আরএসপি সদস্য জয়ন্ত পাণ্ডে বলেন, “ডাক্তার নেই, ফার্মাসিস্ট নেই, ওখানে ঠিক মতো পরিষেবা পাওয়া যায় না। এক জন ডাক্তার আছে শুনেছি, কিন্তু তিনি অনিয়মিত। ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটা ভবনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল কিন্তু আজও তা রূপায়িত আর হয়নি।”
নওদা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্গ সাহা রায় হলেন, “এক জন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নিয়মিত বসেন। তিনিই ওই কেন্দ্রের স্বাস্থ্য আধিকারিক। আউটডোরে নিয়মিত রোগীরা ভিড় জমান। তবে চিকিৎসকের সংখ্যা কম। সেই অভাবই মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” |