কংক্রিটের সেতুর দাবিতে কান দেয়নি প্রশাসন। তাই এলাকার মানুষ নিজেরাই বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপার করেন। কিন্তু বর্ষায় নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় সাঁকোর অনেকটাই অংশ জলের তলায়। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতেও থেমে নেই পারাপার। কারণ অন্য কোনও উপায় নেই।
উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমায় স্বরূপনগরের তরণীপুর ও বেড়ি গোপালপুরের মধ্যে ইছামতী নদীর উপরে গ্রামবাসীদের তৈরি বাঁশের সাঁকোর বর্তমানে এমনই অবস্থা। জলে ডুবে যাওয়ায় সাঁকোর অধিকাংশ জায়গা পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যেই পারাপার করতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে। স্থানীয় মানুষের দাবি, পারাপার নিরাপদ করতে প্রশাসন অবিলম্বে কোনও ব্যবস্থা না নিলে তাঁরা বড় ধরনের আন্দোলনে নামবেন। |
বিপজ্জনক পারাপার। উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে তরণীপুর ও
বেড়িগোপালপুরের মধ্যে ইছামতী নদীর উপরে বাঁশের সাঁকো। ছবি: নির্মল বসু। |
তবে এই প্রথম নয়। পাকা সেতুর দাবি নিয়ে এর আগেও আন্দেলনে নেমেছেন এলাকার মানুষ। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকা সেতু তৈরির জন্য এক সময় শিলান্যাসও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আজও কেন সেতু হয়নি তা জানা নেই কারও। সেতুর জন্য কয়েক মাস আগে কমিটি গড়ে আন্দোলনও শুরু করেছেন এলাকার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, ওই এলাকায় ফেরিঘাটের ইজারাদারদের সঙ্গে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের আঁতাতের কারণেই সেতু তৈরি হচ্ছে না। কারণ সেতু হয়ে গেলে ফেরি পারাপারের প্রয়োজন একেবারেই কমে যাবে। সে ক্ষেত্রে ক্ষতি হবে ফেরিঘাটের ইজারাদারদের। কিছুদিন আগে সেতুর দাবিতে আন্দোলনকারীরা ফেরিঘাটে ইজারাদারদের গুমটি পুড়িয়ে দেন। বিডিও অফিসের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন। শেষ পর্যন্ত এলাকার বাসিন্দারাই চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে নেন। কিন্তু বর্ষায় সেই সাঁকোর অবস্থা খারাপ। যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ, এই ভাবে পারাপার বিপজ্জনক জেনেও প্রশাসনের কোনও হুঁশ নেই। স্থানীয় রমেন মণ্ডল, ফকির গাজি, কাজল হালদার বলেন, ‘‘পাকা সেতু হলে বনগাঁ ও স্বরূপনগরের মধ্যে যোগাযোগের উন্নতি হবে। কিন্তু এক দিকে সেতু কমিটির আন্দোলন আর অন্যদিকে প্রশাসন, ফেরিঘাটের ইজারাদার, রাজনৈতিক নেতা সব মিলিয়ে সেতু তৈরির বিষয়টি জটিল আকার নিয়েছে। যা অবস্থা তাতে সেতু আদৌ হবে কি না কে জানে!”
যদিও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বসিরহাটের মহকুমাশাসক শ্যামল মণ্ডল। |