|
|
|
|
হলদিয়া উপনগরীতে দুর্ভোগ |
শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে বন্ধ রান্নার গ্যাস সরবরাহ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে বন্ধ হয়ে গেল রান্নার গ্যাস সরবরাহ। ফলে দুর্ভোগে হলদিয়া উপনগরী ও সংলগ্ন এলাকার প্রায় ২৭ হাজার পরিবার।
উপনগরীতে রান্নার গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিটি ও আইওসি সমবায় সংস্থার সিলিন্ডার ওঠানো-নামানোর কাজে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ১ অগস্ট থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকেরা। টানা এগারো দিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় জটিলতা বেড়েছে। হলদিয়া উপনগরী ও সংলগ্ন ক্ষুদিরামনগর, ব্রজনাথচক, আজাদহিন্দ নগরে দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে লিক্যুইফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে মূলত সিপিটি (বন্দর) ও আইওসি (হলদিয়া রিফাইনারি) এই দুটি সমবায় সংস্থা। তবে ওই সমবায় দু’টির মধ্যে সিপিটি ভারতগ্যাস ও আইওসি ইন্ডেন গ্যাস সরবারহ করে।
প্রকল্প এলাকা থেকে ওই উৎপাদিত এলপিজি সিলিন্ডারগুলি সমবায় দু’টিতে এলে তা গাড়ি থেকে ওঠানো-নামানোর কাজ করেন মূলত স্থানীয় ভ্যান রিকশা চালকেরাই। এত দিন ওই শ্রমিকেরা প্রতি সিলিন্ডার ওঠানো নামানোর জন্য ১ টাকা করে পেতেন। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে মে মাস থেকে মজুরি বাড়িয়ে ২ টাকা করার দাবি জানায় শ্রমিকেরা। মাসখানেক আগে এ বিষয়ে মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে সব পক্ষ বৈঠকে বসেন। বৈঠকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনার জন্য আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও মজুরি বাড়ার কোনও আভাস না পাওয়ায় ১ অগস্ট থেকেই শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে দেন। তৃণমূল পরিচালিত ওই ভ্যান রিকশা চালকদের সংগঠনের সম্পাদক বাবলু বেরার অভিযোগ, “১৫ বছর ধরে একই মজুরিতে শ্রমিকদের কাজ করতে হচ্ছে। মহকুমাশাসকের সামনে বৈঠকে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিবহণ সংস্থা ও সমবায় সংস্থাগুলি মজুরি বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে মজুরি বৃদ্ধির কোনও পূর্বাভাস না পাওয়ায় আমরা আন্দোলনে নেমেছি।” তবে শ্রমিকদের এই কাজ বন্ধে দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ গ্রাহকদের। হলদিয়া উপনগরীর বাসিন্দা কাকলি পালোধি, তারাপদ প্রধানদের কথায়, “যাঁদের দুটি সিলিন্ডার তাঁদের এখনও কোনও রকমে চলে যাচ্ছে। তবে বেশি দিন তো এ ভাবে চলবে না। তাই সমবায়গুলিকেই এই জটিলতার আশু সমাধান করতে হবে।”
কী ভাবছে সমবায় সংস্থাগুলি?
সিপিটি সমবায় সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ১৬ হাজার গ্রাহক এই পরিষেবা পান। সিপিটি সমবায় সংস্থার ম্যানেজার নন্দলাল দিন্দা বলেন, “আমাদের সংস্থায় এখন কোনও নির্বাচিত বোর্ড নেই। ফলে আমরা একা শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে পারি না। ওই শ্রমিকেরা মূলত পরিবহণ সংস্থা থেকে টাকা পায়। তবে গ্রাহক সমস্যার কথা মাথায় রেখেই বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করব।” আইওসি সমবায় সংস্থার প্রায় ১১ হাজার এলপিজি গ্রাহক রয়েছে। আইওসির সমবায় সংস্থার ম্যানেজার তরুণ ঘোড়ই বলেন, “এই পরিস্থিতিতে আমরা মহকুমাশাসক থেকে সমস্ত প্রশাসনিক মহলে বিষয়টি জানিয়েছি। তবে এরা সকলেই অস্থায়ী শ্রমিক। এদের মজুরি দেওয়ার দায়িত্ব গুদামঘরে সিলিন্ডার ঢুকিয়ে দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিবহণ সংস্থাগুলির। আমরা একক ভাবে টাকা বাড়াতে পারি না।” হলদিয়ার মহকুমাশাসক শঙ্কর নস্করও বলেন, “এটা ওদের সংস্থার আভ্যন্তরীণ বিষয়। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে আগেই বৈঠকে বসে সমস্যা মিটিয়ে দিয়েছিলাম। ওরা যদি আবারও বৈঠক করার কথা জানায়, তবে ভেবে দেখব।” |
|
|
|
|
|