হবে তল্লাশি
আমজনতার সঙ্গে ভুয়ো সিমে জেরবার পুলিশও, তদন্তে ধাক্কা
ভুয়ো সিম কোনও নতুন কথা নয়। তবে তার জেরে ফ্যাসাদে পড়ছে পুলিশও। ধাকা খাচ্ছে তদন্ত। মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে যেখানে এক-দু’দিনে ঘটনার কিনারা করা যায়, সেখানে ১০-১২ দিনেও তদন্তে দাঁড়ি টানা যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরীর বক্তব্য, “প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া সিম কার্ড বিক্রি হতে পারে না। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, যাঁর কাগজপত্র দেখিয়ে সিম কেনা হচ্ছে, তিনি কিছুই জানতে পারছেন না। প্রয়োজনে শহর ও শহরতলি এলাকায় তল্লাশি শুরু হবে।”
সম্প্রতি একটি মামলার তদন্তে নেমে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে পুলিশের। তদন্তের সূত্রে মোট ১২টি মোবাইল নম্বর পুলিশে হাতে এসেছিল। পরে দেখা যায়, এর মধ্যে ১১টি নম্বরই ভুয়ো। অর্থাৎ সিম ব্যবহার করেছেন একজন। কিন্তু কেনা হয়েছে অন্য জনের কাগজপত্র দেখিয়ে। মামলাটি মেদিনীপুর কোতয়ালি থানার। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৯ জুলাই মেদিনীপুরের চিকিৎসক কে সি পালকে হুমকি-চিঠি দিয়ে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। মাওবাদীদের নাম করে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ফোনেও হুমকি দেওয়া হয়। ১৫ জুলাই ওই চিকিৎসক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার তদন্তে নেমেই ভুয়ো সিমের জেরে জেরবার হতে হয় পুলিশকে। শেষমেশ, মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর ধরে ঘটনার কিনারা হয়। জেলা পুলিশের এক অফিসারের কথায়, “এ সব ক্ষেত্রে অভিযুক্তের খোঁজ না পেলে ঘটনার কিনারা করা সম্ভব নয়। সিম যদি ভুয়ো হয়, তাহলে তদন্ত ব্যাহত হবেই।”
শুধু পুলিশ নয়, ভুয়ো সিমের জেরে আকছার সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষও। যেমন, শেখ নাসের আলি। জেলা পরিষদের এই কর্মী একটি সিম ব্যবহার করতেন। অন্য মোবাইলের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে তিনি আর একটি সিম কেনেন। তাঁকে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে সিমটি চালু হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। তখন খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, যে সংস্থার ‘সিম’ তিনি নিতে চান, তাঁর নামে সেই সংস্থার ৯টি সিম আগেই দেওয়া হয়ে গিয়েছে। নাসেরও মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। তাঁর বক্তব্য, “আমার নামে যে সব সিম কেনা হয়েছে, সেগুলো ব্যবহার করে কেউ যদি দুষ্কর্ম করে, তার দায় কে নেবে?”
জেলার জঙ্গলমহলে এক সময় মাওবাদীরা বেশ সক্রিয় ছিল। তখন তাদের কাছেও এমন ভুয়ো সিম কার্ড পৌঁছত। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের কাছ থেকে এই সংক্রান্ত নানা তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর-খড়্গপুরের মতো শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াও সিম কার্ড বিক্রি হয়। গত বছর সিআইডি একটি মামলার তদন্তে নেমে জানতে পারে, প্রতারণা চক্রে যুক্ত এক ব্যক্তি ৪টি সিম ব্যবহার করত। দু’টি নিজের নামে, দু’টি অন্য নামে। এখন তো মোবাইল সিম কার্ডের খুচরো বিক্রেতার ছড়াছড়ি। চাইলেই সিম পাওয়া যায়। এই নিয়ন্ত্রণ উঠে যাওয়ার জেরে সমস্যা আরও বাড়ছে। সাধারণ গ্রাহকদের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে পুলিশকেই নজরদারি বাড়াতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতেনাতে ধরে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করতে হবে। না হলে ভুয়ো সিমের বাড়বাড়ন্তে দাঁড়ি টানা যাবে না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.