|
|
|
|
কেরল |
বাম অবরোধ সচিবালয়ে, বাহিনী ডাকলেন চান্ডি
সন্দীপন চক্রবর্তী • নয়াদিল্লি |
সৌর কেলেঙ্কারির বিচারবিভাগীয় তদন্ত এবং মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চান্ডির ইস্তফার দাবিতে আজ, সোমবার থেকে কেরলে রাজ্যের সচিবালয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য অবরোধে নামছে সিপিএমের নেতৃত্বাধীন এলডিএফ। প্রতি দিন এক লক্ষ করে কর্মী-সমর্থক তিরুঅনন্তপুরমে এনে সচিবালয় ঘিরে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে বিরোধীরা। এমন আন্দোলন ঘিরে দক্ষিণী রাজ্যে উত্তেজনা এতটাই চরমে যে, কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনী তলব করেছে চান্ডি সরকার। বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে রাজধানী শহরের স্কুল-কলেজ। মুখ্য প্রশাসনিক দফতর লাগাতর অবরোধের কর্মসূচি এবং তার মোকাবিলায় আধা-সামরিক বাহিনী নামানো দুই পদক্ষেপই সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরল!
সৌর প্রকল্পের নামে প্রতারণার অভিযোগে কিছু দিন আগে কেরলে গ্রেফতার হন এক মহিলা ও তাঁর এক সঙ্গী। অভিযোগ ইউডিএফ সরকারের একাধিক মন্ত্রীর প্রশ্রয়ে তাঁরা প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিলেন। এমনকী প্রতারকদের এক জনের সঙ্গে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী চান্ডির বৈঠকের খবর প্রকাশ্যে চলে আসে। এ জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে তাঁর এক সহযোগীকে বরখাস্ত হতে হয়েছে। দুর্নীতির দায়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে ইতিমধ্যেই কেরলে হরতাল পালন করেছে এলডিএফ। বিধানসভার অধিবেশনে ধুন্ধুমার হয়েছে। তার পরেই এ বার সচিবালয় অবরোধের কর্মসূচি। এক সঙ্গে ময়দানে নেমেছেন কেরল সিপিএমের দুই যুযুধান নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দন এবং পিনারাই বিজয়ন!
লোকসভা ভোটের আগে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে সোমবার তিরুঅনন্তপুরমে হাজির থাকছেন সিপিএম এবং সিপিআইয়ের দুই সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট ও সুধাকর রেড্ডি। থাকার কথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা জেডি (এস) নেতা এইচ ডি দেবগৌড়ারও।
মুখ্যমন্ত্রী চান্ডি জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ইস্তফা দেবেন না। বরং, বামেদের কর্মসূচিকে ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা’ আখ্যা দিয়ে কড়া হাতে মোকাবিলা করতে চাইছে প্রশাসন। দু’কোম্পানি আইটিবিপি এবং সিআরপি নেমে পড়েছে তিরুঅনন্তপুরমে। কেন্দ্রের কাছে আরও ২৪ কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী চেয়েছে রাজ্য। রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী তিরুভাঞ্চুর রাধাকৃষ্ণন রবিবার বলেছেন, “সাধারণ মানুষ এবং সরকারি কর্মীদের অসুবিধা তৈরি করে এমন কর্মসূচি গণতন্ত্রে চলতে পারে না! সচিবালয় ভবন প্রহরার দায়িত্বেই মূলত সিআরপি-কে রাখা হবে। ক্যান্টনমেন্ট গেট দিয়ে মন্ত্রী-কর্মীদের ভিতরে ঢোকার ব্যবস্থা করা হবে।” যা শুনে কেরল থেকে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ বিজয়রাঘবন বলছেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী নামিয়ে ওঁরা দেখাচ্ছেন, ওঁরা কত গণতান্ত্রিক! যেখানে বাধা পাব, সেখানে ধর্নায় বসে পড়ব! তাতে শহর অচল হলে হবে!” বামেদের কর্মসূচি উপলক্ষে রাজধানীর নানা প্রান্তে খোলা হয়েছে কমিউনিটি কিচেন। শনিবার এমনই একটি কিচেন ভাঙতে গিয়ে বাধা পেয়ে ফিরতে হয়েছে পুলিশকে। কেরলের এক সিপিএম নেতা বলছেন, “জঙ্গি আন্দোলন কাকে বলে, গোটা দেশ এ বার দেখবে!”
কেরলের এই কর্মসূচিই সিপিএমের অন্দরে তৈরি করেছে বিতর্ক। সৌর কেলেঙ্কারির মতো বিষয়ে কেরলের নেতা-কর্মীরা যদি এ ভাবে পথে নামেন, পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোকাবিলায় দল এত গুটিয়ে কেন? এক সিপিএম সাংসদের কথায়, “রাস্তা তো দেখাচ্ছে কেরলের রাস্তা!”
লোকসভা ভোটের আগে যত সফল হবেন বিজয়নেরা, দলে তত চাপে পড়বেন বিমান বসুরা! |
পুরনো খবর: জনতার জন্য ২৪ ঘণ্টাই দফতর মুখ্যমন্ত্রী চান্ডির |
|
|
|
|
|