তপ্ত হায়দরাবাদে সম্প্রীতির সুর বিনয়ী মোদীর
শান্ত হায়দরাবাদে সম্প্রীতির সুর শোনালেন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির মুখ নরেন্দ্র মোদী।
ভোটের মাস কয়েক আগে আসনের অঙ্ক কষে কংগ্রেস যে আলাদা তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের চাল দিয়েছে, তার উত্তাপে টগবগ করে ফুটছে অন্ধ্রপ্রদেশ। রাজধানী হায়দরাবাদের দখল নিয়েও চলছে প্রবল মন কষাকষি। সেই হায়দরাবাদের ঐতিহাসিক লালবাহাদুর স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়েই নরেন্দ্র মোদী উচ্চারণ করলেন, “তেলঙ্গানা-সীমান্ধ্র
লালবাহাদুর স্টেডিয়ামে
নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
ভাই-ভাই। জয় তেলঙ্গানা, জয় সীমান্ধ্র। উন্নয়নের জোয়ারেই আমরা মুছে নেব সব ভেদাভেদ।” স্টেডিয়ামে জমায়েত হাজারো তেলঙ্গানা-সীমান্ধ্রবাসীকে শপথ পড়ালেন উন্নয়নের মুখ হিসেবেও নিজেকে প্রমাণ করা মোদী “ইয়েস উই ক্যান। উই উইল ডু। জয় তেলঙ্গানা! জয় সীমান্ধ্র! ” সঙ্ঘের গোঁড়ামির রাস্তায় হেঁটে ইংরেজি ছেড়ে হিন্দি ভাষার ওপর জোর দিচ্ছেন দলের সভাপতি রাজনাথ সিংহ। দাক্ষিণাত্য অভিযানের প্রথম এই সভায় নরেন্দ্র মোদী কিন্তু তাঁর বক্তৃতা শেষ করলেন ইংরেজিতেই। দক্ষিণী যুবকদের মন জিততে ভাষার গোঁড়ামি ছুড়ে ফেলতে একটুও দ্বিধা করেননি তিনি। কিন্তু এখানেই দাঁড়ি নয়। দক্ষিণের প্রথম সভায় মোদী বুঝিয়ে দিলেন, অসহিষ্ণুতা-ঔদ্ধত্যের অভিযোগ ঝেড়ে ফেলতেও তিনি সমান যত্নবান। এ দিনের সভায় নিজের রাজ্য গুজরাতের অগ্রগতির খতিয়ান তুলে ধরে এক বারও অহঙ্কার প্রকাশ করেননি, যেমনটি সচরাচর করে থাকেন তিনি। সনিয়া গাঁধী-মনমোহন সিংহকে বিঁধতে গিয়ে টানলেন লালকৃষ্ণ আডবাণীর প্রসঙ্গ।
কালো টাকা উদ্ধারের দাবি তুলে যাত্রা করেছিলেন আডবাণী, কংগ্রেস কিন্তু নিশ্চেষ্টই থেকে গিয়েছে। তারিফ করলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানেরও। অথচ এই আডবাণী-চৌহান কিন্তু নানা সময়ে দলের অন্দরে-বাইরে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা মোদীর নেতৃত্বের বিরোধী। সন্দেহ নেই আজকের এই হিসেব করা চালে দলের সব মহলে আরও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে চেয়েছেন মোদী। দেখাতে চেয়েছেন বৃহত্তর দায়িত্ব পালনে নেমে তিনি আগের চেয়ে অনেক বেশি বিনয়ী।
মঞ্চেই এক প্রবীণের পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। রবিবার হায়দরাবাদে। ছবি: এএফপি
মোদী নেতৃত্বে এলে শরিকরা আসবে না এনডিএ-তে এই অপবাদ ঘোচানোরও আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছেন তিনি। হায়দরাবাদে পৌঁছেই বিজেপির এই মুখ বৈঠক করেছেন অন্ধ্রের এক সময়ের মুকুটহীন রাজা নন্দমুরি তারক রাম রাওয়ের পুত্র নন্দমুরি হরিকৃষ্ণ ও তেলুগু দেশম নেতা বালকৃষ্ণের সঙ্গে। হায়দরাবাদের সভা থেকেও মোদী প্রকাশ্যে তেলুগু দেশমকে সঙ্গে আসার ডাক দিয়েছেন। সরাসরি নাম না করেও চন্দ্রবাবু নায়ডুকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন এন টি আর-এর স্বপ্নের কথা। তেলঙ্গানা গঠনে কংগ্রেস যে সকলের সঙ্গে আলোচনা করেননি, সে কথা বলে বার্তা দিয়েছেন জগন্মোহন রেড্ডিকেও। তারিফ করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতারও। কংগ্রেসের উদ্দেশে বলেছেন, “গুজরাতের দৃষ্টান্ত নিতে সমস্যা হলে জয়ললিতার থেকে অন্তত কিছু শিখুন।” শুনিয়ে রাখলেন, “এখন কেউ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন, কেউ কাল আসবেন, কেউ আসার কথা ভাবছেন। বলে রাখি, দেশ জুড়ে কিন্তু কংগ্রেস-বিরোধী হাওয়াই বয়ে চলছে।” উপকূলবর্তী রাজ্যগুলির সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রসঙ্গ টানলেন পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশারও। যে রাজ্যের শাসক দলের নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নবীন পট্টনায়ক।
দল ও সম্ভাব্য শরিকদের কাছে পরিবর্তিত মোদী কিন্তু আজ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার বার্তাই দিলেন। যুবকদের চাঙ্গা করার দোহাই দেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রামমন্দিরের কথা বলেননি, তোলেননি উগ্র হিন্দুত্বের জিগিরও। ধর্ম নিয়ে কোনও উস্কানি দেননি বটে, কিন্তু এক প্রৌঢ়াকে মায়ের সম্মান দিয়ে তাঁর আশীর্বাদ নিলেন। এই প্রৌঢ়া কেরলের খ্রিস্টান আর বিবাহ সূত্রে শিখ। সুকৌশলে সংখ্যালঘু তাস খেলা বলতে ছিল এইটুকুই। বাকিটা শুধুই উদারতা।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.