দিঘায় আটশোর ঘর আড়াই হাজার
সেই চেনা ছবি। টানা তিন দিনের ছুটিতে ভিড় উপচে পড়ল দিঘায়। সুযোগে বুঝে রাজ্যের অন্যতম সৈকত পযর্টনকেন্দ্রে হোটেল-লজের ভাড়া এক লাফে বেড়ে গেল দ্বিগুণ, তিন গুণ। সপরিবারে দিঘায় বেড়াতে এসে মাথায় হাত বাঙালিবাবুর। কেউ কেউ কেনাকাটা, খাবার বরাদ্দে কাটছাঁট করে বেশি দামে হোটেলে উঠলেন। কেউ আবার চরম হেনস্থার শিকার হয়ে ফিরে এলেন বাড়িতে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘দিঘাকে গোয়া’ বানানোর যত চেষ্টাই করুন, এখানের হোটেল ব্যবসায়ীদের মানসিকতার ‘পরিবর্তন’ বাস্তবিকই দুঃসাধ্য।
শুক্রবার ছিল পবিত্র ঈদ। ঈদের ছুটি এবং পরে শনি ও রবিবার মিলে টানা তিন দিন ছুটি পাওয়ায় সপ্তাহান্তে পযর্টকদের ঢল নেমেছিল দিঘায়। যাঁরা আগে থেকে হোটেল ‘বুক’ করেছিলেন, তাঁদের অতটা সমস্যা হয়নি। কিন্তু যাঁরা কোনও ব্যবস্থা না করেই হাজির হয়েছিলেন দিঘায়, হোটেলের ‘রেট’ শুনে তাঁদের চোখ কপালে উঠেছে। যে হোটেলের ঘরভাড়া ৫০০ থেকে মেরেকেটে ৮০০ টাকা, সেখানে চাওয়া হচ্ছে দু’হাজার, আড়াই হাজার। হোটেল মালিকদের এই ‘জুলুমবাজি’তে বিপদে পড়েন পর্যটকরা।
দিঘার সৈকতে।— নিজস্ব চিত্র
যেমন, বসিরহাটের মুস্তাক খান। শুক্রবার ঈদের নমাজ সেরে নিজের গাড়িতে চেপে সপরিবারে দিঘার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। বিকালে দিঘায় পৌঁছন। পরিকল্পনা ছিল, শনিবার দিনটি দিঘায় কাটিয়ে রবিবার ফিরে যাবেন। কিন্তু নতুন দিঘা ও পুরাতন দিঘার একাধিক হোটেলে ঘুরেও শুক্রবার রাত আর শনিবারের জন্য ঘর পাননি তিনি। মুস্তাক খানের অভিযোগ, “যে সব হোটেল খালি ছিল, তারাও শুক্র থেকে রবিটানা তিন দিন ছাড়া ঘর দিতে অস্বীকার করে। বিপদে পড়েছি বুঝতে পেরে কিছু হোটেল আবার এমন দাবি করে, যা আমার সাধ্যের বাইরে। দিঘার বেশিরভাগ হোটেলে ভাড়ার তালিকা টাঙানো নেই। তারই সুযোগ নিয়ে যে যার মতো চাইছে।” শুক্রবার রাতেই মুস্তাক খান পরিবার নিয়ে বসিরহাট ফিরে যান। খোঁজ নিয়ে জানা গেল তিনি একা নন, এমন অনেকেই ফিরে গিয়েছেন বা যেতে বাধ্য হয়েছেন।
কলকাতার একটি পযর্টন সংস্থার কর্ণধার অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে আমরা দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হই। এমন চললে আগামী দিনে দিঘা পযর্টকশূন্য হয়ে পড়বে।”
দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্মসচিব বিপ্রদাস চক্রবর্তী পরিস্থিতির কথা মেনে নিয়ে বলেন, “দিঘায় পযর্টকদের ভিড় হলেই একশ্রেণির হোটেল মালিক অস্বাভাবিক হারে ভাড়া বাড়িয়ে দেন। এর ফলে আখেরে দিঘার বদনাম হচ্ছে। এটা রুখতে প্রশাসনকেই এগিয়ে আসতে হবে।”
বাস্তবেও প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হয়েছে শনিবার। একের পর এক অভিযোগ পেয়ে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিক সৌমেন পালকে দিঘায় গিয়ে হোটেল মালিক সংগঠনের কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠকে বসতে হয় এ দিন। বৈঠকে সৌমেনবাবু হোটেল মালিকদের সতর্ক করে বলেন, “১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষেও দিঘায় প্রচুর পযর্টকের ভিড় হবে। ওই সময়ের মধ্যেই দিঘার সমস্ত হোটেলে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টাঙিয়ে ফেলতে হবে। কোনও হোটেল বেশি ভাড়া নিচ্ছে খবর পেলেই পর্ষদ ব্যবস্থা নেবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.