কোথাও গিয়ে ব্যাগপত্তর নামিয়ে কিছু দিন একটু আরাম করব, সে আমার ভাগ্যে কোথায়! তবে তাতে আক্ষেপও করি না। বরং বেশ অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি ব্যাপারটার সঙ্গে। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে কতই না ফ্যাশনদুরস্ত লোকেদের সঙ্গে দেখা হয়! ভারতীয়রাও এখন বেশ ফ্যাশন-সচেতন। আইফা হোক বা ব্রাইডাল উইক, কুতিয়র উইক হোক কী ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল জুয়েলারি উইক— সেলিব্রিটি ফ্যাশন এখন সত্যিই তাক লাগিয়ে দিচ্ছে।
গ্রিন কার্পেটের অভিনেত্রীরা শুধু পোশাকেই নয়, মানসিক দিক থেকেও অনেক বদলে গিয়েছে। এখনকার যে সেলিব্রিটি ডিভাদের দেখে আমি মুগ্ধ, তাঁদের তালিকাটা বড়ই দীর্ঘ। তবু তার মধ্যেও সোনম কপূর, নেহা ধুপিয়া আর হুমা কুরেশির কথা বলতেই হবে।
সোনমের সঙ্গে আমার দেখা হল ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল জুয়েলারি উইক-এ। একটা দোলচে অ্যান্ড গাবানা অফ-শোল্ডার পোশাকে কী অপূর্ব যে দেখাচ্ছিল ওকে! পোশাকটা এমনিতে সাধারণ হলেও একটা ক্লাসি ব্যাপার রয়েছে। সোনম যে ভাবে ওই রকম একটা পশ্চিমি পোশাকের সঙ্গে একটা হিরের নেকলেস ম্যাচ করে পরেছে সেটা দেখে আমি মুগ্ধ। আমার মতে এটাই হল ক্লাসিক সোনম কপূর স্টাইল। ভারতের অন্যতম ফ্যাশন ডিভা সোনম। সাহস করে পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে নেকলেস কে পরবে বলুন তো! সোনম যদিও সবার থেকে আলাদা। আর তাই তো ফ্যাশনের ব্যাপারে এতটা সাহসী।
আর এক অভিনেত্রীর স্টাইলও আমাকে মুগ্ধ করেছিল। সে হল মুগ্ধা গডসে। ওই একই অনুষ্ঠানে মুগ্ধা পরেছিল একটা লেহঙ্গা। সঙ্গে বুস্টিয়ার। আর পরেছিল একটা অসাধারণ সোনার গয়না। গয়নাটার মধ্যে ছোট্ট একটা গণেশ ডিজাইন করে আঁকা ছিল।
সোনম কপূর। ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল জুয়েলারি উইক-এ
ভুলে যাওয়ার আগে বলে দেওয়া ভাল আইফা-তে নেহা ধুপিয়ার স্টাইল স্টেটমেন্টও ছিল মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো। মাটিতে লুটনো একটা কালো রংয়ের ড্রেস পরেছিল নেহা। লেস স্লিভ দেওয়া। সব চেয়ে আকর্ষণীয় ছিল ওর মজাদার অ্যাকসেসরিজগুলো। গাউনের সঙ্গে ও পরেছিল একটা আলাদা সাদা রংয়ের কলার। চুলটা নিট করে বেঁধে আটকানো ছিল একটা সুন্দর হেয়ারব্যান্ড দিয়ে। চোখের মেক-আপে ও বেছে নিয়েছিল স্মোকি লুক। একটা কালো রঙের ক্লাচ আর এই সাজে নেহা মাতিয়ে দিয়েছিল আইফার গ্রিন কার্পেট।
হুমা কুরেশিও খুব স্টাইলিশ। হুমা নিজের চেহারার গড়ন অনুযায়ী সাজে। আর এটাই ওর ফ্যাশন সচেতনতার প্রমাণ। ওকে দেখলাম একটা আনারকলি চুড়িদারের সঙ্গে
নেহা ধুপিয়া
শুধুমাত্র একটা নেকলেস পরতে। সোনায় যে ফিলিগ্রি কাজটা করা ছিল সেটাই ওর লুক সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিল।
আর কিছু দিনের মধ্যেই তো বাঙালি পুজো নিয়ে মেতে উঠবে। শপিংও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। উৎসবের কথা মাথায় রেখে পাঁচটা টিপস আপনাদের দিলাম ১. আপনি যদি বিয়েবাড়ি যান, তা হলে শাড়ির সঙ্গে একটা জ্যাকেটও পরে নিন। সনাতনী কায়দায় যাঁরা শাড়ি পরে যাবেন তাদের ভিড়ে আপনাকে একদম আলাদা দেখাবে। ২. আজকাল অনেকেই ব্লিং পরছেন। তবে হ্যাঁ, সব জায়গায় পরবেন না যেন। ধরুন কাঁধে পরলেন। শাড়ির ভাঁজেও পরতে পারেন। খুব আলাদা রকম দেখাবে। ৩. প্যান্ডেলে ঘুরতে গেলে পরে নিতে পারেন দু’টো আলাদা আলাদা পিস-এর রেডিমেড শাড়ি। অবশ্যই নিয়ন রঙের। কমলা আর গোলাপি রঙের হলে খুবই উজ্জ্বল হবে সাজটা। ৪. এই মরসুমে ম্যাক্সি ড্রেসটাও খুব হিট। দামেও ঠিকঠাক। যাঁরা অনলাইন শপিং করেন মাঝেমধ্যেই, তাঁরা তো ওখানেই কিনতে পারবেন। ৫. এখন স্টেটমেন্ট জুয়েলারির জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মতো। ধরুন আপনি একটা ভারতীয় পোশাক পরেছেন। সঙ্গে যে একটা নেকলেসই পরতে হবে, তার কোনও মানে নেই। সম্প্রতি নায়িকা অমৃতা রাও লাদাখকে দেখলাম একটা অফ-শোল্ডার পোশাকের সঙ্গে ঝুমকা পরতে। অমৃতাকে অসম্ভব গর্জাস লাগছিল দেখতে। আনারকলি স্যুট পরলে মাথায় লাগাতে পারেন একটা মাঙ্গটিকা। একসঙ্গে একগাদা গয়না পরবেন না কখনও। দু’টো বা তিনটেই যথেষ্ট। না হলে খুব সাজানো একটা ক্রিসমাস ট্রি-র মতো দেখতে লাগতে পারে আপনাকে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website
may be copied or reproduced without permission.