মা @৪০
বিদেশে এমনটা আকছার ঘটে। চল্লিশ পেরোলে চালশে সেখানে আর বলা হয় না। সেলিব্রিটি মায়ের ক্ষেত্রে তো একেবারেই না। তবে আমাদের দেশের অভিনেত্রীরা ও পথে খুব একটা হাঁটেননি। সেক্সি সেলিব্রিটি মায়ের সংখ্যা কম নেই। মালাইকা অরোরা খান থেকে চিত্রাঙ্গদা সিংহ। কাজল থেকে টুইঙ্কল খন্না। কিন্তু চল্লিশের পরে মাতৃত্ব? নাহ্! সেটা শোনা যায় না।
অভিনেত্রী জয়া শীল ঘোষ ব্যতিক্রম। আপাতত নতুন ফ্ল্যাটে এসে এখন নতুন অতিথির অপেক্ষা। জীবনটা বেশ অন্য রকম লাগছে, তাই না? “একদম। আরে আমার ছেলে তাতিন তো খালি আমাকে বলে যাচ্ছে, “হ্যালো মোটু!” আর আমি ওকে বলছি, আমাকে মোটু বলিস না। পেটু বল বরং,” হাসতে হাসতে বললেন জয়া।
কিন্তু সেলিব্রিটি হয়ে একচল্লিশ বছর বয়সে এসে এ রকম একটা সিদ্ধান্ত... কথাটা শেষ করার আগেই বললেন, “তাতিনের সঙ্গীর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিলাম। কেউ যখন আমাকে বলত, দ্বিতীয় সন্তানের কথা, আমি সব সময় ‘না’ বলতাম। আর তাতিন পাশ থেকে বলত, “প্লিজ, আমার জন্য।” বিক্রম (ঘোষ) একমাত্র সন্তান। কিন্তু ও-ও দ্বিতীয় সন্তান চাইত। যখন বুঝলাম আমি অন্তঃসত্ত্বা, প্রথমে একটু কনফিউজড ছিলাম। সবে আবার কাজ করতে শুরু করেছি। তাতিনের আট বছর বয়স। আমারও ঝাড়া হাত-পা। তার পর ভাবলাম না, দোটানার মধ্যে থাকার কোনও প্রয়োজন নেই। আমরা নিজেরাই তো তিন ভাই-বোন। ফ্যামিলি বন্ডিংয়ের জন্য সেটা খুব ভাল।”
কেরিয়ারের এই সময় এসে ছেড়ে দিলে আবার যদি নিজের জায়গাটা তৈরি করতে অসুবিধা হয়? গলাটা একটু ভারী শোনালো অভিনেত্রীর। বললেন, “আমার মধ্যে ডেসপারেশন নেই। আমি জানি আমি কী চাই। পরিবার আমার কাছে সব কিছুর আগে। তাতিন আসার পর পাঁচ বছরের ব্রেক নিয়েছিলাম। এ বার কিন্তু সে ভাবে ভাবছি না। বাচ্চা হওয়ার তিন মাস পরেই হয়তো কাজ নিয়ে ভাবব।”

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল
কিন্তু আমাদের দেশে অন্যান্য অভিনেত্রীরা তো চল্লিশ পেরিয়ে মা হওয়ার কথা ভাবেননি। শুনেই জয়া জানালেন, “বয়েস জানি না। তবে, ঋতুপর্ণার মেয়েও তো ওর ছেলে হওয়ার বেশ কিছু বছর পরেই হয়েছে। ওর এই সিদ্ধান্তকে আমি কুর্নিশ জানাই। কাজল, করিশমা আর টুইঙ্কল এই অভিনেত্রীদের সবার দ্বিতীয় সন্তান হয়েছে। গৌরী খানও তো চল্লিশ পেরিয়ে তৃতীয় সন্তানের মা হলেন। যদিও সেটা সারোগেসি। আমি নিজের কেরিয়ারটাকে অন্যদের থেকে একটু আলাদা ভাবে ভাবি। ঋতুপর্ণা যে ঘরানার কাজ করে, আমি সেই ঘরানায় নেই।” একটা অসমিয়া ছবি করেছেন। নাম ‘শৃঙ্খল’। হয়তো অক্টোবরে মুক্তি পাবে সেটা। এই তো সে দিন দূরদর্শনে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের পরিচালনায় তাঁর অভিনীত শর্ট ফিল্মগুলো দেখানো হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের কবিতার ওপর ভিত্তিতে তৈরি— ‘বাঁশিওয়ালা’ আর ‘হঠাৎ দেখা’। এছাড়াও মুক্তি পাবে ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস’।
তবে জয়া তো শুধু অভিনেত্রী নন। সিনেমা, নাটকের সঙ্গে নাচেও তিনি আছেন। এই তিন মাধ্যমে ফেরার জন্য কত সময় নেবেন? “নাচের জন্য আমাকে ফিট থাকতে হবে। আমার ডেলিভারির তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বরের কাছাকাছি। তার পর ছ’মাসের মধ্যেই হয়তো স্টেজে ফিরতে পারব। হিন্দি নাটক করতে আমি উৎসুক। ডিসেম্বর থেকে স্ক্রিপ্ট শুনতে শুরু করব। এখন মনে হয় শিল্পী হিসেবে আমার কিছু দেওয়ার আছে। আমি নিজেকে থামাব না,” দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শোনাল তাঁকে।
নিজেকে যে তিনি থামাবেন না, সেটা তো পরিষ্কার। পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েও তিনি শ্যুট করেছেন নাচের দৃশ্য! হ্যাল বেরি ছেচল্লিশ বছর বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হয়েও শ্যুটিং করেছেন ‘এক্স-মেন’ ছবিতে। জয়া কি হ্যাল বেরিকে দেখে অনুপ্রাণিত হলেন? “হলিউডের অভিনেত্রীদের ফিটনেস আলাদা। হ্যাঁ, আমি একটা সুফি নাচের দৃশ্য করেছি। তখন আমার পাঁচ মাসের প্রেগনেন্সি। কাকু (বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত) বলেছিলেন, ‘আনোয়ার কা আজব কিসসা’তে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির পিসির চরিত্রে অভিনয় করার জন্য। যিনি এক মুসলিম পরিবারের গৃহবধূ। ডাক্তারের অনুমতি নিলাম। নিজেই কোরিওগ্রাফি করলাম। প্রেগনেন্সিটা একটু একটু বোঝা যাচ্ছিল হয়তো। কিন্তু সেটে যে ভাবে আমাকে খাতির-যত্ন করা হত, সেটা দারুণ লেগেছিল,’’ জানালেন আনোয়ারের ‘ফুফিজান’।
‘আনোয়ার...’-এ নয় অভিনয় করলেন। কিন্তু একটা হিন্দি ছবির অফার পেয়েও যে করা হল না! “হ্যাঁ, একটা বড় কাজ ছিল। কিন্তু আমি প্রথমেই বলে দিয়েছিলাম যে, আমি প্রেগনেন্ট। কিন্তু রোলটা যা ছিল, সেটা আমি অনায়াসেই করতে পারতাম। তবে পরিচালক আমাকে সাফ জানিয়ে দেন এই অবস্থায় কাজ করা যাবে না।”
মহিলা পরিচালক হয়েও এ রকম বিভেদ করলেন? “আমি ওকে দোষ দেব না। হয়তো প্রযোজক রাজি হননি। বা হয়তো এটাই বলিউডের রেওয়াজ। ঐশ্বর্যার প্রেগনেন্সির সময়ও তো আমরা এটাই শুনেছিলাম। তবে এ দিক থেকে কিন্তু কলকাতা বেশ এগিয়ে। আমি অন্তঃসত্ত্বা জেনেও কাকু কিন্তু একবারও না করেননি।” সঙ্গে জানালেন, সেই হিন্দি ছবিটার শ্যুটিং শুরু হয়ে গিয়েছে।
কথা হচ্ছিল জয়ার জোকা-র ফ্ল্যাটে। সেনহাটির যৌথ পরিবার ছেড়ে একলা থাকতে অসুবিধা হচ্ছে না? “একটু তো অন্য রকম লাগছে। আগে শাশুড়িমা সব চালাতেন। এখন আমাকে দেখতে হয়। তবে এই বাড়িতে এসে তাতিনের সঙ্গে বিক্রমের বন্ডিংটা আরও বেশি দেখতে পাচ্ছি। সেটাও ভাল লাগছে,” বলে কথার ইতি টানলেন জয়া।

হলি কথা

হ্যাল বেরি
এখন বয়স ৪৬।
৪২ বছর বয়সে হ্যাল জন্ম দিয়েছেন
মেয়ে নাহলাকে। নাহলার বাবা হ্যালের
প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড মডেল গ্যাব্রিয়েল অব্রে।
এখন আবার অন্তঃসত্ত্বা হ্যাল

মারিয়া ক্যারে
৪০ বছর বয়সে মারিয়া জন্ম দেন
দুই যমজ সন্তানের। প্রেগনেন্সির সময়
তাঁকে বেশ ঝামেলা পোয়াতে হয়েছে।
ছেলের নাম মনরো। মেয়ের নাম মরোক্কান।
স্বামী র্যাপশিল্পী নিক ক্যানন


নিকোল কিডম্যান
৪১ বছর বয়সে প্রথম
‘বায়োলজিক্যাল’ সন্তানের
জন্ম দেন। মেয়ের নাম সানডে
রোজ কিডম্যান আরবান। স্বামী
সঙ্গীতশিল্পী কিথ আরবান

সালমা হায়েক
৪১ বছর বয়সে জন্ম দিয়েছেন
তাঁর মেয়ে ভ্যালেন্টিনের। স্বামী ফরাসি
বিলিয়নেয়র ফ্রসোয়াঁ-অঁরি পিনো।
সালমা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন,
“আমি মা হতে চেয়েছিলাম এই সময়ে”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.