চৌত্রিশ বছরের বাম শাসনে রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতির যে দাপট ছিল, পালাবদলের পরেও কিছু ক্ষেত্রে তা অব্যাহত রয়েছে বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলার অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। এর পরে এক মন্ত্রীর মন্তব্য ফের বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।
শনিবার উচ্চশিক্ষা বিষয়ক এক কর্মশালার পরে রাজ্যের শিক্ষা-পরিবেশ সম্পর্কে রবিরঞ্জনবাবু বলেন, “বাম আমলে শিক্ষাক্ষেত্রে পড়াশোনার থেকে রাজনীতি হয়েছে বেশি। এখনও কিছু ক্ষেত্রে সেই ধারা অব্যাহত। আমি বলব, কিছু ক্ষেত্রে সিপিএমকেই অনুকরণ করা হচ্ছে।” সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, “দীর্ঘ সময় ধরে এই ধারা চলে আসছে। এক দিনে বদল সম্ভব নয়। চেষ্টা চলছে, সময় লাগবে।”
তৃণমূল সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল, শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত করা হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি বলে আক্ষেপ করেন শিক্ষানুরাগীদের অনেকেই। এমনকী, দলের নেতা-মন্ত্রীদের অনেককেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতির মাথায় বসানো হয়েছে। বহু ক্ষেত্রে তাঁদের আবার বাম আমলের ধারার পাল্টা হিসাবে এখন বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের দাপট শুরু হয়েছে বলেও অভিযোগ। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনও এ দিন অভিযোগ করেছে, রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলছে। রবিরঞ্জনবাবুর মন্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে রবিরঞ্জনবাবু বলেন, “প্রেসিডেন্সিকে হার্ভার্ড করার চেষ্টা চলছে। বাকি বিশ্ববিদ্যালগুলির উন্নয়ন না ঘটিয়ে একটির উৎকর্ষ ঘটাতে চাইলে শিক্ষার সামগ্রিক উন্নয়ন হবে না।” এ ব্যাপারে ব্রাত্যবাবু বলেন, “প্রেসিডেন্সিকে উৎকর্ষকেন্দ্র হিসাবে গড়ার পরিকল্পনা মুখ্যমন্ত্রীর।” |