মহাত্মা গাঁধীর ভক্ত তিনি। টোলগে-পেনদের নিয়ে গাঁধী নির্দেশিত পথে শৃঙ্খলাবদ্ধ একটি দল হিসাবে মহমেডানকে গড়তে চান কোচ আব্দুল আজিজ বুলা। “গাঁধী ছিলেন বড় মাপের মানুষ। তাঁর দেখানো পথেই মহমেডানকে শৃঙ্খলায় বাঁধতে চাই। ভারতে আসার আগেই আপনাদের এই মহাত্মার লেখা অনেক বই পড়ে ফেলেছি...।”
শুধু মেঠো যুদ্ধ নয়। আজিজ চান প্রান্তিক মানুষের জীবনসংগ্রামেও শামিল হোক হোন দলের ফুটবলাররা। এবং সেটা করতে নাইজেরীয় কোচের ভাবনাটা অভিনব। অনুশীলনে কোনও ফুটবলার দেরি করলে, আর্থিক জরিমানা বাধ্যতামূলক। আর সেই টাকা তৎক্ষণাৎ পাঠিয়ে দেওয়া হবে অনাথ শিশুদের সাহায্যের জন্য। ফিনল্যান্ডে কোচিং করিয়ে আসা আজিজ শনিবার সকালে অনুশীলনের পর বলছিলেন, “আমরা প্রত্যেকে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ। অনাথ শিশুরা, যাদের কেউ নেই, তাদের পাশে দাঁড়ানোর থেকে মহৎ কাজ আর কিছু হয় না।” |
শুধুমাত্র আর্থিক দান নয়। অনাথ শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে প্রতি সপ্তাহে অসীম-অ্যামব্রোসদের অনাথ আশ্রমে পাঠাতে চান সাদা-কালো কোচ। “ফুটবল জনসংযোগের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেয়। ছোটদের কাছে টোলগে-পেনরাই তো আদর্শ। ওই সব শিশুরা যদি এক ঘণ্টাও টোলগেদের সঙ্গ পায়, আমি নিশ্চিত ওদের বেঁচে থাকার মানেটাই পাল্টে যাবে।” খুশির ঈদের পরদিন আজিজ জানাচ্ছেন, তাঁর এই উদ্যোগ কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ে সীমাবদ্ধ থাকছে না।, “আমি চাই সব সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে থাকতে। যার যেটুকু সামর্থ্য সেই মতো। একমাত্র সেটা করলেই মনে হবে কিছু একটা করতে পেরেছি।”
মহমেডান কোচ শনিবারের অনুশীলনে বল ধরতে দেননি ফুটবলারদের। রেড রোডে দৌড়ঝাঁপের জন্য নয়। সকাল থেকে মেঘে ঢাকা শহরে নজর কাড়ল আজিজের ‘স্যান্ড ট্রেনিং’। সমুদ্রের পাড়ে নয়, রেসকোর্সের ভিতরের বালিতে রীতিমতো ঘাম ঝরালেন টোলগেরা। খালি পায়ে পেন ওরজির সারাক্ষণ অনুশীলন করাটাও ছিল বড় চমক। |
রেস কোর্সের বালিতে খালি পায়ে পেন। |
অসুস্থতার জন্য আসেননি জোসিমার। এমনিতে দলের ফিটনেস নিয়ে এখনও খুশি নন মহমেডান কোচ। “এখনই বলতে পারছি না, দলের ফিটনেস নিয়ে আমি খুব খুশি। তবে প্রচণ্ড পরিশ্রম করছে ফুটবলাররা। মনে হচ্ছে মরসুম শুরুর আগে দল তৈরি হয়ে যাবে।” কথায় কথায় বলছিলেন, কলকাতা ময়দানই তাঁর নতুন পরীক্ষাকেন্দ্র। “চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি। ইউরোপে অনেক দিন কাটিয়ে মনে হয়েছিল এ বার অন্য এক ফুটবল ঘরানায় কাজ করব। সেই কারণেই ভারতের থেকে প্রস্তাব পেয়ে রাজি হয়েছিলাম। গাঁধীর দেশ নিয়েও আগ্রহ চলছিল।” |