বগলে গেঁথে গিয়েছিল পার্কের গেটের গ্রিল। অস্ত্রোপচার ছাড়াই এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় তা বার করে ফেলা গিয়েছে বলে দাবি করলেন চিকিৎসকেরা।
ঘটনাটি ঢাকুরিয়ার। স্কুল ছুটির পর বিকেলে ঢাকুরিয়ার পার্কে বন্ধুদের সঙ্গে হইহই করে ফুটবল খেলছিল বছর এগারোর বিবেক ঘোষ। কারও একটা শটে বলটি পার্কের পাঁচিল পেরিয়ে বাইরে চলে যায়। বল আনতে ছোটে জগবন্ধু ইনস্টিটিউশনের ক্লাস সেভেনের পড়ুয়া বিবেক। পার্কের গেটে বর্শার ফলার মতো লোহার গ্রিল লাগানো ছিল। খেলার তাড়ায় সেই গেট টপকাতে গিয়েছিল কিশোরটি। কিন্তু পা পিছলে গেটের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে সে। বর্শার ফলার মতো অংশটা তার বাঁ হাতের বগলের কাছে গেঁথে কনুই দিয়ে বেরিয়ে আসে। অস্ত্রোপচার ছাড়াই বিশেষ উপায়ে সেই গ্রিল বার করেছেন রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকেরা। রক্ষা পেয়েছে বিবেকের হাত এবং অবশ্যই জীবন। |
বিবেকের বাড়ি ঢাকুরিয়া অঞ্চলের পঞ্চাননতলা রোডে। বাবা মহেশ ঘোষ মাছ বিক্রি করেন। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলেন। পাড়ার লোকেরা তখন ফোন করে ঘটনার কথা জানান। তাঁরাই স্থানীয় গ্রিলের দোকান থেকে গ্যাস কাটার এনে গ্রিলের মাথা কেটে বিবেককে হাসপাতালে নিয়ে যান। গ্রিলের তীক্ষ্ন ফলাটা তখনও বিবেকের হাতে ঢুকে ছিল! যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল ছেলেটা।
অস্থিবিশেষজ্ঞ অনির্বাণ ভট্টার্চাযের কথায়, “গ্রিল ঢুকে বাচ্চাটির হাতের ধমনী এবং স্নায়ু নষ্ট হতে পারত। হাতে পচনও ধরতে পারত। যেহেতু শরীরের এই অংশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্নায়ু রয়েছে তার ফলে সামান্য গোলমালে রোগীর প্রাণ বিপন্ন হতে পারত। তাই অস্ত্রোপচারে না গিয়ে ‘মিনিমাল ইনভেসিভ সার্জারি’ করেছি।”
কি এই অস্ত্রোপচার?
চিকিৎসকেরা জানান, ক্ষতস্থানের দু’পাশে দু’টি ইউরেনারি ক্যাথিটার ঢুকিয়ে টেনে জায়গাটাকে প্রসারিত করে গ্রিলের ফলাটা বার করে আনা হয়েছিল। কোনও স্নায়ু বা ধমনী তাতে কাটেনি।” চিকিৎসকেদের দাবি, বিবেক হাসপাতালে থাকলেও এখন ভাল আছে। তার হাতেও কোনও সমস্যা নেই। কিছু দিনের মধ্যেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। |