ঘুষ নেওয়া সার্জেন্টদের লালবাজারে ডেকে ধমক
রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ খাওয়ার ‘তথ্য’ নতুন নয়। কিন্তু এ বার ঘুষ-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে লালবাজারে ডেকে ভর্ৎসনা করে সতর্ক করা হল তিরিশ জন ট্রাফিক সার্জেন্টকে। পুলিশ সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে পার্কিং থেকে টাকা তোলার অভিযোগে সাসপেন্ড হওয়া এক কনস্টেবলের ডায়েরি ও মোবাইল ফোন ঘেঁটেই ওই সার্জেন্টদের নম্বর মিলেছিল।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, সপ্তাহ কয়েক আগে শীর্ষ কর্তারা জানতে পারেন, রিজার্ভ ফোর্সের এক কনস্টেবল শহরের বিভিন্ন লরি ও ম্যাটাডর পার্কিং থেকে বেআইনি ভাবে টাকা তুলছেন। তদন্তভার দেওয়া হয় এক ডেপুটি কমিশনারকে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার পরেই রমাপদ সরকার নামে ওই কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, রমাপদর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গিয়েই একের পর অফিসারের নাম বেরিয়ে আসতে থাকে। রমাপদর ডায়েরি ও মোবাইল থেকে অন্তত ২০০ জন অফিসারের নাম মিলেছে বলে পুলিশকর্তারা জানান। ডায়েরিতে কোন কোন অফিসার রমাপদর কাছ থেকে কত ‘মাসোহারা’ নিতেন, তারও হদিস পান পুলিশকর্তারা। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে লালবাজার।
ট্রাফিক বিভাগের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ওই ডায়েরিতে নাম থাকা ৩০ জন অফিসারকে শনিবার লালবাজারে ডেকে পাঠান কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (২) সৌমেন মিত্র এবং যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) সুপ্রতিম সরকার। লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের পার্কিং লট থেকে টাকা তোলার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে প্রত্যেককেই সতর্ক করে দিয়েছেন শীর্ষ কর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, বছর দশেক আগে রমাপদ জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। সে সময় থেকেই পোস্তা, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এলাকায় বিভিন্ন অবৈধ পার্কিং থেকে টাকা তুলতেন। শিয়ালদহ ও কোলে মার্কেট এলাকার পার্কিং লট থেকেও তোলা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে রমাপদর বিরুদ্ধে। পরবর্তী কালে রিজার্ভ ফোর্সে বদলি হয়ে গেলেও অবৈধ পার্কিং লট চক্র থেকে বেরোননি তিনি।
কিন্তু এই সতর্ক করার ফলেই কি কলকাতার অবৈধ পার্কিং চক্রে রাশ টানা যাবে?
কলকাতা পুলিশের দীর্ঘদিন কাজ করে যাওয়া এক আইপিএস বলছেন, শহরে বেআইনি পার্কিং চক্রের পিছনে পুলিশের একটি বড় অংশের মদত রয়েছে। সেই চক্র এত সহজে নিষ্ক্রিয় করা যাবে না। তাঁর কথায়, “অবৈধ পার্কিংয়ের কথা জানেন ট্রাফিক বিভাগের শীর্ষ কর্তারাও।”
অবৈধ পার্কিং চক্রের কথা উঠে এসেছে কলকাতা পুলিশের নিচুতলার কর্মী-অফিসারদের একাংশের মুখেও। তাঁদের বক্তব্য, এ পর্যন্ত পার্কিং লট থেকে টাকা আদায় করা সংক্রান্ত যা তথ্য বেরিয়েছে, তা নেহাতই ‘হিমশৈলের চূড়ামাত্র।” কলকাতা পুলিশের মাঝারি ও উপরতলার কয়েক জন অফিসারও এই চক্র থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিতেন বলে ওই অফিসারদের দাবি।
“তদন্তে নেমে এ বার লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা মাঝারি ও উপরতলার অফিসারদেরও সতর্ক করেন কি না, সেটাই এখন দেখার” মন্তব্য এক পুলিশকর্তার।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.