শপিং মল ভেঙে মৃত ৯
৭ বছর লড়ে ক্ষতিপূরণ সওয়া কোটি
০০৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর দিল্লির সরিতা বিহারে শপিং মল ধসে মালদহের রতুয়ার ৮ ও মানিকচকের একজন জন শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন। মৃত শ্রমিক পরিবারগুলি পাশে রাজ্য সরকার, কেন্দ্র সরকার কেউ সাহায্যের বাড়ায়নি বলে অভিযোগ। তবে মৃত ৯ জন শ্রমিকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মালদহের এক বধূ।
তিনি বতর্মানে কেন্দ্রীয় সরকারের ধর্ষণ, ট্র্যাফিকিং এবং নারী নিযার্তন রুখতে স্পেশাল ট্যাস্ক ফোর্সের চেয়ারপার্সন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। মৃত শ্রমিক পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করতে তিনি ওই শপিংমল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। টানা সাত বছর ধরে মামলা লড়ে অভিযুক্ত শপিংমলের মালিকের কাছ থেকে ১ কোটি ২১ লক্ষ ৭৬ ৭৯৯ টাকা আদায় করেছেন। দিল্লি হাইকোর্ট গত ৩১ জুলাই ওই নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে অভিযুক্ত শপিংমল কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে ক্ষতিপূরনের টাকা জমা করে দিয়েছে। শুক্রবার মালদহে এসেছেন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। জেলার দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র, কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী, জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে নিয়ে তিনি মানিকচক ও রতুয়ায় মৃত শ্রমিকদের বাড়ি গিয়ে ক্ষতিপূরনের টাকা পাওয়ার খবর পৌঁছে দেন।
শ্রীরূপাদেবী বলেন, “আমি মালদহের গৃহবধূ। মালদহের প্রতি আমার একটা আলাদা টান রয়েছে।” তিনি বলেছেন, “দিল্লিতে থাকাকালীন একদিন শুনলাম একটি শপিংমল ধসে পড়ে কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে। ধস সরিয়ে ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে দিল্লি পুলিশ। পরে জানতে পারি ওই ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই মালদহে। দিল্লি সরকার সেই সময়ে মৃত শ্রমিক পরিবারগুলিকে ১৩ হাজার টাকা দিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য কোনও রকম সাহায্য করেনি। এর পরেই আমি পরিবারগুলিকে নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই।”
রাজ্যের দুই মন্ত্রী সাবিত্রীদেবী এবং কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “উনি এ ভাবে মৃত শ্রমিক পরিবারগুলির পাশে না দাঁড়ালে ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করা সম্ভব হত না। কিছুদিন আগে মুম্বই-এ বাড়ি ধসে মালদহে যে ১০ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন, তাঁদের পাশেই একই ভাবে দাঁড়াতে আমরা শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীকে বলেছি।”
শপিং মলে কাজ করতে মারা গিয়েছিলেন মানিকচকের কাহারপাড়ার মিঠু মাহারা। এদিন দুপুরে দুই মন্ত্রীর কনভয় গ্রামে ঢুকতেই গোটা গ্রামে শোরগোল পড়ে যায়। শ্রীরূপা দেবীকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত মিঠু মাহারার বাবা যতীন মাহারা। তখন ক্ষতিপূরনের টাকা পাওয়ার কথা শুনে নিজে আর ঠিক রাখতে পারেননি। শ্রীরূপা দেবীকে জড়িয়ে ধরে রতুয়ার গুঞ্জা মণ্ডল হাউহাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “সবাই আমাদের কথা ভুলে গিয়েছিল। আপনি না থাকলে ক্ষতিপূরণের এক টাকাও পেতাম না।” রতুয়ার সবজিপাড়ার সাগনি সবজি এ দিন শ্রীরূপাদেবীর জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন। গুঞ্জাদেবীর স্বামী সুরেশবাবু এবং সাগনিদেবীর স্বামী আফসার আলি সবজিও দিল্লিতে ওই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন।
প্রায় চার ঘণ্টা ধরে শ্রীরূপাদেবী মৃত নয় শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমার বলেন, “ক্ষতিপূরণের টাকা মৃত শ্রমিকদের পরিবারের সঠিক আত্মীয় যাতে পায় তা দেখা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.