ব্যতিক্রম।
জাতীয় আয় বৃদ্ধির হার সাকুল্যে ৫%। শেয়ার বাজার টালমাটাল। পায়ের তলায় শক্ত মাটি খুঁজে পেতে নাভিশ্বাস উৎপাদন, পরিকাঠামো, ইস্পাত, গাড়ির মতো অধিকাংশ বড় শিল্প। এর মধ্যে কিছুটা ব্যতিক্রমী হয়েই বছরে প্রায় ২০% হারে বাড়ছে ‘হেলথকেয়ার’ বা স্বাস্থ্য পরিষেবা শিল্প। মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ-এর হিসেব অনুযায়ী, বছর দু’য়েকের মধ্যেই এ দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবার বাজার হবে ৬ লক্ষ কোটি টাকার। আর সেই কারণেই লাভের গন্ধে এই সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে টাকা ঢালছে দেশি-বিদেশি প্রাইভেট ইক্যুইটি ফান্ডগুলি। যার দৌলতে আগামী দিনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের শহরগুলিতে মিলতে পারে উন্নততর স্বাস্থ্য পরিষেবা।
ইন্ডিয়া ভেঞ্চার অ্যাডভাইজর্স বা সেকুয়ার মতো লগ্নি সংস্থা জানাচ্ছে, পুঁজি ঢালার ক্ষেত্রে তাদের প্রাথমিক পছন্দ মাঝারি মাপের হাসপাতাল। কারণ, সেখানে প্রকল্পের মাপ ছোট। তাই বিনিয়োগ লাগামছাড়া নয়। পরিষেবাও দেওয়া যায় অপেক্ষাকৃত কম দামে। ফলে সহজ হয় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের শহরে মধ্যবিত্ত বাজার ধরা। তাই সংস্থাগুলি এই যুক্তিতে স্থির থাকলে, আগামী দিনে ওই শহরগুলি লাভবান হতে পারে হলেই বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
পুঁজি ঢালতে এই উৎসাহের উত্তাপ পাচ্ছে এ রাজ্যও। গ্লোক্যাল হেলথকেয়ার সিস্টেমস-এ টাকা ঢেলেছে সেকুয়া। পরিকল্পনায় রয়েছে ৩০ শয্যার হাসপাতাল। এবং এ জন্য প্রথম পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিকেই বেছেছে তারা। সেকুয়ার প্রধান জি ভি রবিশঙ্কর জানান, “আমরা চাই ছোট ও মাঝারি হাসপাতাল। যেখানে লগ্নির মূল অংশ চিকিৎসা সরঞ্জাম ও পরিকাঠামো তৈরিতে ব্যয় হবে।” ছোট প্রকল্পে ঝুঁকি কম বলে মনে করেন ইন্ডিয়া ভেঞ্চার অ্যাডভাইজর্সের সঞ্জয় রনধেরও।
কিন্তু জেলায় বা গ্রামে হাসপাতাল ব্যবসা হিসেবে কতটা লাভজনক?
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, কিছু অসুবিধা তো আছেই। তবে সেই ছবি বদলাতে প্রয়োজন লগ্নি সংস্থাগুলির পরিচালন দক্ষতা। সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় স্বাস্থ্য কমিটির প্রধান রূপালি বসুর দাবি, “দামের দিকে নজর রাখতে হবে। কম খরচে পরিষেবা দিয়েও লাভের দিশা দিতে পারে লগ্নি সংস্থাগুলি।”
একই মতের শরিক মেডিকা হাসপাতালের অন্যতম অংশীদার অয়নাভ দত্ত গুপ্ত। প্রসঙ্গত, বছর সাতেক আগে মেডিকায় টাকা ঢেলেছিল আই সি আই সি আই ভেঞ্চার্স। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, এখন নিজেদের অংশীদারি বেচে প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যেতে চায় তারা।
|