পুরসভা উদাসীন, রাস্তা সংস্কারের কাজে হাত লাগালেন গ্রামবাসীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • উলুবেড়িয়া |
অনেক দিন ধরে রাস্তা বেহাল। পুরসভাকে জানানো সত্ত্বেও উদ্যোগী হয়নি তারা। তাই চাঁদ রাত (ঈদের আগের রাত) থেকে নিজেরাই রাস্তা সারাইয়ের কাজে নামলেন উলুবেড়িয়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিজবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা। জানালেন, গোটা রমজান মাস ধরে গ্রামবাসী ও পথচারীদের থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়েছে এর জন্য। সেই টাকা দিয়েই শুরু হয়েছে রাস্তা সারাইয়ের কাজ।
সিজবেড়িয়া গ্রামের এই রাস্তাটি উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসকের কার্যালয় থেকে বনস্পতি খালের বাঁধ ধরে সোজা গিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে মিশেছে। লেভেলক্রসিং না থাকায় এই রাস্তাটি জাতীয় সড়কের সঙ্গে উলুবেড়িয়া শহরের যোগাযোগের মাধ্যম। প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও তা ব্যবহার করেন। স্কুলপড়ুয়া, কলেজপড়ুয়া, মহকুমাশাসকের কার্যালয়, থানা, আদালত, হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যাওয়ার জন্যও এই রাস্তা ব্যবহার করা হয়। |
রাস্তা সারাইয়ের কাজ চলছে। ছবি: সুব্রত জানা। |
এত গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা বেহাল জানা সত্ত্বেও পুরসভা উদ্যোগী হয়নি বলে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ জাহির সুলতান, শেখ পিন্টুরা বলেন, “বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। পুরসভা কর্তৃপক্ষ থেকে কমিশনার, সকলকে জানানো সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি। তাই আমরা, দু’শো জন গ্রামবাসী এই দু’কিলোমিটার রাস্তা মেরামত শুরু করেছি চাঁদ রাত থেকে। ঈদের দিনেও নমাজ পড়ে এসে রাস্তা সারাইয়ের কাজ করছি।”
উলুবেড়িয়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের শেখ আব্বাসউদ্দিন বলেন, “চার মাস আগে টেন্ডার পাশ হয়ে গিয়েছে। বর্ষার জন্য কাজ শুরু করা যায়নি। দ্রুত কাজ শুরু হবে।” তাঁর দাবি, “সামনেই পুরভোট। তাই সিপিএমের লোকজন বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছেন।”
উলুবেড়িয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সাবিরউদ্দিন মোল্লা বলেন, “আমরা কেন রাজনীতি করব? পুরসভার উপরে সাধারণ মানূষের আস্থা নেই। তাই তাঁরা নিজেরাই চাঁদা তুলে রাস্তা সারাইয়ের কাজ করছেন। এতে পুরসভার লজ্জা হওয়া উচিত।” তাঁর দাবি, দুর্নীতির কারণে দীর্ঘ ছ’মাস ধরে পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ডের উন্নয়নের কাজ বন্ধ। দেখা যাবে, এখানকার বেশিরভাগ রাস্তাই খাতায়-কলমে হয়ে গিয়েছে। অথচ বাস্তবে তা হয়নি।” |