বৃষ্টি চলবে, বিহার-ঝাড়খণ্ডকেও টানছে বাংলা
প্রায় থিতু হয়ে বসা মৌসুমি অক্ষরেখার দৌলতে বাংলা থেকে এখনই মুখ ফেরাচ্ছে না বর্ষা! শুধু তাই নয়, বাংলার এই সক্রিয় বর্ষার দৌলতে বিহার-ঝাড়খণ্ডের বৃষ্টি-ভাগ্যও খুলতে পারে মনে করা হচ্ছে।
আবহবিদরা বলছেন, বিহার ও সংলগ্ন এলাকার উপরে একটি নিম্নচাপ রয়েছে। তার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে মৌসুমি অক্ষরেখাও। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে সেটি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বৃহস্পতিবার বলেন, “আপাতত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি চলবে। পশ্চিমাঞ্চলের শুখা জেলাগুলিতে বেশি বৃষ্টি হবে।”
পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে অবশ্য এ বছর বৃষ্টির পরিমাণ তুলনায় বেশি। বিশেষ করে বাঁকুড়া জেলায় অতিবৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ ওই অঞ্চলের বাকি জেলাগুলিতে মোটামুটি স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত হিসেবে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ-সহ গোটা রাজ্যেই মোটামুটি স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে বলে মৌসম ভবন সূত্রের খবর।
জলমগ্ন বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর। ছবি: উদিত সিংহ
যদিও মরসুমের শুরু থেকে দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টি-ভাগ্য এতটা দরাজ ছিল না। ঘড়ির কাঁটা ধরে বর্ষা দক্ষিণবঙ্গে হাজির হলেও মাঝপথে মুখ খুবড়ে পড়ে সে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি এসে দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টির ঘাটতি ত্রিশ শতাংশ ছাড়িয়েছিল।
এমনটা হয়েছিল গত বছরও। ২০১২ সালে জুন মাসে বর্ষা প্রায় হয়নি বললেই চলে। জুলাইয়ে ভারী বৃষ্টি হলেও সে ঘাটতি মেটেনি। যার প্রভাব পড়েছিল কৃষির উপরেও। এ বছর জুলাইয়ের মাঝামাঝি বর্ষার হাল দেখে ফের আগের বছরের পরিস্থিতি ফিরে আসবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন কৃষি-বিদেরা।
পরিস্থিতি বদলায় জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে। দশ দিনের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয় চার-চারটি নিম্নচাপ। দক্ষিণবঙ্গে থিতু হয়ে বসে মৌসুমি অক্ষরেখাও। এর ফলেই বৃষ্টির ঘাটতি কমে। এক আবহবিদের কথায়, “জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে বর্ষা এই ঝোড়ো ইনিংসটা না খেললে দক্ষিণবঙ্গের চাষিরা বিপদে পড়তেন।”
সকালে বৃষ্টির পর হাওড়ার এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম। প্রদীপ আদকের তোলা ছবি।
একই পরিস্থিতি হতে পারত উত্তরবঙ্গের মালদহ ও দুই দিনাজপুরেও। ওই জেলাগুলির কোথাও কোথাও বৃষ্টির ঘাটতি ৪৫ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। কিন্তু বুধবার তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে ওই জেলাগুলিতেও ভাল বৃষ্টি হয়েছে। আবহবিদেরা বলছেন, বৃষ্টির ঘাটতি ছিল প্রতিবেশী দুই রাজ্য বিহার ও ঝাড়খণ্ডেও। কিন্তু আগামী কয়েক দিনে সেখানেও বৃষ্টি হতে পারে। মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার পর্যন্ত ওই দু’টি রাজ্যে ৩১ শতাংশ বৃষ্টি ঘাটতি রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে নিম্নচাপ ও মৌসুমি অক্ষরেখার যুগলবন্দিতে সেই ঘাটতি কিছুটা মিটতে পারে বলে আবহবিজ্ঞানীরা জানান। তবে বর্ষার দরাজ মনোভাব নিয়ে চিন্তাও রয়েছে। সেচ দফতরের কর্তারা বলছেন, উত্তরবঙ্গে মহানন্দা ও তিস্তায় জলস্তর বেড়েছে। মালদহ-মুর্শিদাবাদেও গঙ্গায় জলতল বেড়েছে। ওই নদীগুলিতে কোথাও কোথাও জল বিপদসীমার উপর দিয়েও বইছে বলেও জানা গিয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বিপর্যয়ের খবর মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.