একলা চলার নীতি নিয়েছে শাসক-বিরোধী। ফলে মুর্শিদাবাদের ত্রিশঙ্কু গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গড়া নিয়ে জটিলতার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে।
জেলার ৬৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৬টি পঞ্চায়েত সমিতিতে কোনও দলই নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে জোটবদ্ধ বোর্ড হবে ওই পঞ্চায়েতগুলিতে। কিন্তু তৃণমূল ও সিপিএমের পরিষ্কার জানিয়েছে, কোনও দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা বোর্ড গড়বে না। যদিও কংগ্রেস ও বিজেপি এ ব্যাপারে ধীরে চলার নীতিতে এগোতে চাইছে। চলতি মাসের ১৬ তারিখ থেকে পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। বিজেপির জেলা সভাপতি মালা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে পঞ্চায়েত বোর্ড গড়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় কর্মীরা যে কোনও দলকেই সমর্থন করতে পারবেন।” তাঁর সংযোজন, “রাজনৈতিক অস্থিরতার দরুন এলাকার উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই উন্নয়নের স্বার্থে স্থানীয় নেতৃত্ব যে কোনও দলকেই সমর্থন দিতে পারেন।” কংগ্রেসও স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে বোর্ড গঠনের পক্ষপাতী। জেলা কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, “ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই ত্রিশঙ্কু বোর্ডে দলের ভূমিকা চূড়ান্ত করা হবে।” অন্যদিকে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্গ ভট্টাচার্য খোলাখুলি বলেন, “ত্রিশঙ্কু গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রধান ও সভাপতি পদে দল প্রার্থী দেবে। কোনও দলকে বোর্ড গঠনের ব্যাপারে সাহায্য করা হবে না। দলের এই সিদ্ধান্ত নীচু তলায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরন মন্ত্রী সুব্রত সাহা পরিষ্কার বলেন, “বোর্ড গড়ার ক্ষেত্রে কোনও দলকেই আমরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন করব না।” কিন্তু জেলায় অন্তত ২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে, যেখানে সিপিএম ও তৃণমূল নির্নায়ক শক্তি। ওই পঞ্চায়েতগুলিতে ওই দু’টি দল কাউকে সমর্থন না করলে বোর্ড গঠন করা কার্যত অসম্ভব। যেমন জিয়াগঞ্জের প্রসাদপুর পঞ্চায়েতে ২৮টি আসনের মধ্যে বামেরা পেয়েছে ১৩টি। কংগ্রেসের দখলে গেছে ৫টি আসন। তৃণমূলের ঝুলিতে রয়েছে ২টি। বিজেপির আসন সংখ্যা ৪। এ ক্ষেত্রে বাম-তৃণমূল অন্য কোনও দলকে সমর্থন দেওয়া ও নেওয়ার প্রশ্নে অনড় থাকলে বোর্ড গড়া প্রায় অসম্ভব। এই অবস্থায় কী হবে? রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটানোর অবশ্য পন্থা রয়েছে বলে মত জেলার পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তার। তিনি বলেন, “ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে সব্বোর্চ আসনধারী দলকে বোর্ড গঠনের সুযোগ দেওয়া হবে। দু’টি দলই যদি সমান আসন পায় সে ক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে অচলাবস্থা কাটানো হবে।” |