কোনও লগ্নি সংস্থা নয়, খোদ ডাকঘর থেকেই গায়েব হয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের জমা করা কোটি টাকা। তছরুপের অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টারকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ।
বর্ধমানের মঙ্গলকোটে নতুনহাট উপ-ডাকঘরে এই তছরুপ সামনে আসে বছর দেড়েক আগেই। ২০১১ সালের নভেম্বরে আত্মহত্যা করেন পোস্টমাস্টার সুনীলকুমার মাঝির ঘনিষ্ঠ এক এজেন্ট। ডাকঘরের কর্মীর মতোই তিনি সরাসরি গ্রাহকদের থেকে টাকা জমা নিতেন। পাশবইতে সিলমোহর দেওয়া হত, নিয়মিত সুদও পেতেন গ্রাহকেরা। পরের বছর ৩১ জানুয়ারি পোস্টমাস্টার অবসর নেন। |
বর্ধমানের ডিএসপি (ডিইবি) অসিত ভট্টাচাযর্ বলেন, “প্রায় কোটি টাকা সরিয়ে পোস্টমাস্টার পালিয়ে গিয়েছিলেন। হাইকোর্টে আগাম জামিনের আর্জি খারিজ হতেই বুধবার রাতে কাটোয়ার সরগ্রামের বাড়ি থেকে ওঁকে ধরি।” বৃহস্পতিবার কাটোয়া আদালত তাঁকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তকারী দলের এক আধিকারিক বলেন, “দফতরের অন্য কিছু কর্মীও জড়িত বলে আমাদের ধারণা।” চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল (সিপিএমজি-বেঙ্গল সার্কেল) যশোবন্ত পন্ডা বলেন, “মঙ্গলকোট ডাকঘর এবং নতুনহাট উপ-ডাকঘর দু’টিতেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। আরও কেউ জড়িত কি না, পিএমজি (দক্ষিণবঙ্গ)-কে তা দেখতে বলা হয়েছে।”এখনও পর্যন্ত যে শতাধিক আমানতকারীর সন্ধান মিলেছে, তাঁদের সকলেরই প্রশ্ন, জমা টাকা ফেরত পাবেন তো? সিপিএমজি-বেঙ্গল সার্কেল বলেন, “যাঁরা ডাকঘরে টাকা জমা দেওয়ার নথি দেখাতে পারছেন, তাঁদের টাকা দ্রুত ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” ডাককর্মী ভেবে কেউ অবৈধ লোকের কাছে টাকা দিয়ে থাকলে তার দায়িত্ব ডাকবিভাগ নেবে না বলে তিনি জানান। ‘ফেডারেশন অব কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের’ সভানেত্রী মালা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার অসাধু কাজে লক্ষ লক্ষ মানুষ সর্বস্বান্ত। ডাকঘরেও যদি তা হয়, খুবই অন্যায়। গ্রাহকদের সতর্ক হতে হবে।” |