পথের কাঁটা সরাতে প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে খুন করেছিলেন স্ত্রী। দু’জনে মিলে নৃশংস ভাবে খুনের পর প্রেমিক স্বামীর দেহ পুঁতে দিয়েছিল খেতে। কিন্তু নিহত সনৎ সর্দারের (৩২) গলার লকেটের সূত্র ধরে স্ত্রী মীনা ও তার প্রেমিক দিলীপ সর্দারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই খুনে আর কেউ জড়িত কি না, দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৪ অগস্ট দুপুরে সন্দেশখালির কাকডাঙা গ্রামে চাষের জমি থেকে সনতের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় এক চাষি লাঙল দেওয়ার সময় দেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। দেহ উদ্ধার করে পুলিশ মর্গে পাঠায়। সে দিনই সনৎবাবুর দাদা ভাইকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশকে জানান। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ মীনাকে নিয়ে মর্গে যায়।
সেখানে প্রথমে দেহটি তাঁর স্বামীর নয় বলে জানান মীনা। কিন্তু মর্গে সেই সময়ে উপস্থিত একটি স্থানীয় ছেলে জানায়, মৃতদেহের গলায় যে লকেট রয়েছে কেমনই একটি লকেট সে সনৎদার গলাতেও দেখেছে। এর পরেই পুলিশের জেরায় ভেঙে পড়ে মীনা স্বীকার করেন, তিনিই খুন করেছেন স্বামীকে। তাঁর কাছ থেকে সব জেনে পরে দিলীপকেও গ্রেফতার করা হয়।
মৃত সনৎ সর্দারের বাড়ি কাকডাঙা গ্রামে। ভাল ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে সুন্দরবন এলাকায় নামডাক রয়েছে। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা দিলীপ সর্দার নিজের বাবা-মা মারা যাওয়ার পরে সনৎদের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। ধীরে ধীরে দিলীপের সঙ্গে দুই সন্তানের মা মীনার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছু দিন আগে তাঁদের দু’জনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন সনৎ। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চরম অশান্তি শুরু হয়। দিলীপকে তাঁর বাড়িতে থাকতে বারণ করে দেন সনৎ।
এর পরেই স্বামীকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে মীনা। পুলিশের দাবি, জেরায় মীনা জানান গত ৩০ জুলাই অগস্ট রাতে নেশা করে বাড়িতে ফিরে বেহুঁশ হয়ে পড়েন স্বামী। সেই সময় দিলীপ সনৎকে চেপে ধরে তার যৌনাঙ্গ কেটে দেয়। মীনাও স্বামীর মুখে বালিশ চেপে ধরেন। পরে দেহটি দড়ি দিয়ে বেঁধে আধ কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে মাঠে পুঁতে দেয় দিলীপ। পরদিন সবাইকে জানিয়ে দেন, স্বামী হাড়োয়ায় কয়েক দিনের জন্য কাজে গিয়েছেন। |