রাস্তাঘাটে জল থইথই। জল ঢুকে গেল দু’ধারের দোকানগুলোয়। জিনিসপত্র বাঁচাতে ছুটে এলেন দোকানিরা। ফাঁকা রেস্তোরাঁয় তখন জলে ভাসছে চেয়ার-টেবিল। ঘুম থেকে উঠেই চক্ষু ছানাবড়া লন্ডনবাসীর। বাড়ির বেসমেন্টে জল। জলমগ্ন বসার ঘর।
কলকাতা লন্ডন হতে পারুক আর না-ই পারুক, বুধবার লন্ডন ছুঁয়ে ফেলল কলকাতাকে!
ভোর সাড়ে পাঁচটা হবে। তলব গেল দমকলবাহিনীর কাছে। পানীয় জলের পাইপ ফেটে ভাসছে শহরের হার্নে হিলের হাফ মুন লেন চত্বর। জল তখন কোমর ছুঁইছুঁই। রাস্তায় থমকে যানবাহন। জল ঢুকে গিয়েছিল হার্নে হিল লাগোয়া ৩৬টি বাড়িতে। লন্ডনের এই এলাকার বাসিন্দারা জলমগ্ন অবস্থা শেষ বার দেখেছিলেন ২০০৪ সালে। সে বার খুব বৃষ্টি হয়েছিল। অফিস-কাছারি ছেড়ে তাই স্থানীয় লোকজন বন্দি রইলেন বাড়িতে। যাঁদের উপায় নেই, বেরোলেন। তবে অনেককেই দেখা গেল লোকের পিঠে চেপে জল পেরোতে। লোকজনের সাহায্যে জলমগ্ন রাজপথে ভাসল নৌকাও। |
জল থইথই এক রেস্তোরাঁ। লন্ডনে। ছবি: গেটি ইমেজেস |
খবর পেয়ে আসেন দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। বন্ধ করে দেন জলের প্রধান সিস্টেম। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাই জলও খানিক নেমে যায়। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন স্থানীয়রা। জল সরতে পরে কাদা পরিষ্কার করতে নামে প্রশাসন।
তবে প্রশ্নের মুখে পড়েছে লন্ডনের নিকাশি ব্যবস্থা। ২০০৪-এ প্রবল বৃষ্টিতে একই অবস্থা হয়েছিল লন্ডনের ওই অঞ্চলের। এ বার কারণটা আলাদা হলেও, নিকাশি ব্যবস্থা যে দুর্বল, তা নিয়ে দন্দ্ব নেই। ‘টেমস ওয়াটার’ জানায়, লন্ডনের জল সরবরাহ ব্যবস্থা বেশ জটিল। তায় আবার ৮৮ বছরের পুরনো পাইপ। ৩ ফুট চওড়া বিশাল ওই জলের পাইপটির ঠিক কোন জায়গা ফেটে গিয়ে এই বিপত্তি, তা এখনও চিহ্নিত করা যায়নি।
এর পরের ছবিটা কিন্তু কলকাতার একেবারেই অচেনা। জল সরবরাহকারী সংস্থা গ্রাহকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে। পথ জল থইথই হলেও, কলের জল বন্ধ হয়নি। সংস্থার কর্তারা জানালেন, “আমরা জলের লাইনের নেটওয়ার্কটা বদলে দিয়েছিলাম। তাই সমস্যায় পড়তে হয়নি।” |