এ যেন মড়ার উপরে খাঁড়ার ঘা!
একেই দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে আর্থিক দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে না পারায় ধুঁকছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থাটি। তার উপরে নদীপথে ওই সংস্থার কারখানায় হানা দিয়ে লক্ষাধিক টাকার মালপত্র লুঠ করল দুষ্কৃতীরা। বাধা দিতে গেলে মারধর করা হয় সংস্থার দুই নিরাপত্তারক্ষীকে। মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে এক সময়ে পূর্ব ভারতের সব চেয়ে বড় জাহাজ তৈরির কারখানা ‘হুগলি ডক অ্যান্ড পোর্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’-এ। আহত রক্ষীদের এক জন হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি। |
এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন স্থানীয় গোলাবাড়ি থানায় বিক্ষোভ দেখায় সংস্থাটির তৃণমূল কর্মচারী সংগঠন। পুলিশ জানায়, লুঠের ওই ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে। কিছু মালপত্রও উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন নৌকা করে এসে গোলাবাড়ি থানা থেকে কয়েক মিনিটের দূরত্বে হুগলি নদীর পাড়ে এই প্রাচীন জাহাজ তৈরির কারখানাটির ওয়ার্কশপে হানা দেয় ১৫-২০ জন সশস্ত্র ডাকাত। তখন ডিউটিতে ছিলেন স্বপন সরকার ও শচীনন্দন অধিকারী নামে দুই রক্ষী। শচীনন্দনবাবু বলেন, “রাত তখন প্রায় সাড়ে ৩টে। হঠাৎ কয়েক জন রিভলভার, রড, ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওয়ার্কশপে ঢুকে পড়ে। আটকাতে গেলে রড দিয়ে মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। দেখি স্বপনকে মাটিতে ফেলে মারছে ওরা।” |
জখম নিরাপত্তারক্ষী স্বপন সরকার ও শচীনন্দন অধিকারী। |
পুলিশ জানায়, নিরাপত্তাকর্মীদের জখম করার পরে দুষ্কৃতীরা অবাধে জাহাজ তৈরির নানা উপকরণ, যেমন লক্ষাধিক টাকা মূল্যের স্টিল ও কাঠের ব্লক নৌকায় তুলে নিয়ে পালায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন সংস্থার পদস্থ আধিকারিকেরা। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় স্বপনবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে শচীনন্দনবাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসরা পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সকালেই সংস্থার পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার সহদেব সাহা বলেন, “এই ধরনের ঘটনা আমাদের এই সংস্থায় প্রথম ঘটল। অনেক টাকার মালপত্র লুঠ হয়েছে। রাতে আরও নিরাপত্তারক্ষী প্রয়োজন বলে মনে হচ্ছে।”
সকালে ওই সংস্থায় কাজে যোগ দিতে এসে এই খবর জানতেই তৃণমূল কর্মচারী সংগঠনের নেতৃত্বে স্থানীয় গোলাবাড়ি থানায় বিক্ষোভ দেখান কর্মচারীরা। পরে হুগলি ডক অ্যান্ড পোর্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মচারী সংগঠনের সভাপতি, উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক অশোক ঘোষ বলেন, “এলাকার দুষ্কৃতীরাই এই কাজ করছে বলে জেনেছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে থানায় বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।” হাওড়ার ডিসি সদর নিশাত পারভেজ জানান, ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুই স্থানীয় দুষ্কৃতীকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে কিছু মালপত্রও। |