হঠাৎ পাক হামলায় কাশ্মীরে হত ৫ জওয়ান, উত্তাল সংসদ
শেষরাত। জঙ্গলমোড়া পাহাড়ি পথে টহলদারিতে বেরিয়েছিল ছ’জনের সেনা দলটি। হঠাৎ ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে এল। প্রাণ হারালেন পাঁচ জওয়ান। গুরুতর আহত হলেন এক জন। সাত মাসের মধ্যে ফের সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পুঞ্চে বড় ধরনের হামলা চালালো পাক সেনা।
জানুয়ারি মাসে এই পুঞ্চ সেক্টরেই নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে দুই ভারতীয় জওয়ানকে খুন করে তাঁদের মাথা কেটে নিয়ে গিয়েছিল পাক সেনা। পরে সীমান্তে কয়েক বার গুলি চলেছে। গত কালও সাম্বা সেক্টরে জখম হয়েছেন এক বিএসএফ জওয়ান।
সেনা সূত্রে খবর, কাল গভীর রাতে পুঞ্চের চাকান-দা-বাগ এলাকায় নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে এসেছিল ১৫-২০ জনের একটি দল। তাতে লস্কর-ই-তইবা জঙ্গিদের পাশাপাশি ছিল পাক সেনারাও। নিয়ন্ত্রণরেখার ওই অংশে কোনও বেড়া নেই। একে পুরো এলাকা জুড়েই গভীর জঙ্গল, তায় অন্ধকার। ভারতীয় এলাকায় গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে তাই খুব বেগ পেতে হয়নি পাক সেনা ও জঙ্গিদের।
সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, টহলদার দলটির নেতৃত্বে ছিলেন নায়েক প্রেমনাথ সিংহ। রাত সওয়া একটার পর থেকে তাঁর বা দলের বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। তখন ওই এলাকাতেই অন্য একটি দলকে টহলে পাঠানো হয় ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ। তারাই পাঁচ জওয়ানের দেহ উদ্ধার করে। প্রেমনাথ-সহ নিহতদের মধ্যে চার জন ২১ নম্বর বিহার রেজিমেন্টের জওয়ান। বাকিরা হলেন, শম্ভুসুরন রাই, রবিনন্দ প্রসাদ এবং বিজয়কুমার রাই। নিহত আর এক জওয়ান, কুলীন মানে মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রির সদস্য। আহত ষষ্ঠ সেনার নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এক মাত্র তিনিই জানাতে পারবেন, কাল রাতে ঠিক কী হয়েছিল। আপাতত তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে রাখা হয়েছে। পরে জম্মুর উধমপুরে নর্দার্ন বেস কম্যান্ড হাসপাতালে তাঁকে আনা হতে পারে।
প্রশ্ন হল, হঠাৎ করে এত বড় হামলা চালাল কেন পাকিস্তান? সেনাবাহিনীর বক্তব্য, গত বেশ কিছু দিন ধরেই সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করছে পাক সেনা। জানুয়ারিতে দুই ভারতীয় সেনার হত্যা-সহ চলতি বছরে মোট ৩৩ বার সংঘর্ষবিরতি ভেঙেছে তারা। ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে সম্প্রতি উত্তর কাশ্মীরে ১৫ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। আজকের হানা তার বদলাও হতে পারে বলে সন্দেহ সেনার।
পুঞ্চে হামলার খবর পাওয়ার পরেই আজ তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয় রাজনৈতিক শিবিরে। সংসদ উত্তাল হয়ে ওঠে। বিবৃতি দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি। কিন্তু বিরোধীরা তাতে সন্তুষ্ট হননি। তাদের তীব্র সমালোচনা ও প্রশ্নের মুখে পড়ে সরকার। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা টুইট করেন, “সম্প্রতি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উন্নতির জন্য কিছু পদক্ষেপ করেছে পাকিস্তান। এই ধরনের ঘটনা তাদের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়।”
বেলার দিকে দিল্লিতে পাক ডেপুটি হাইকমিশনার মনসুর আহমেদকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানায় সাউথ ব্লক। ভারতের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
সরকারি সূত্রে খবর, এ দিন সকালেই পুরো ঘটনার কথা প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে জানান সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহ। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেও সব কথা জানানো হয়। শহিদ সেনাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে অ্যান্টনিকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।


ইউপিএ সরকার দেশের সীমান্ত
রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আর কখন
কেন্দ্রের ঘুম ভাঙবে?


বিশ্বাসঘাতকের মতো আক্রমণ করে
ভারতকে দমিয়ে রাখা যাবে না।
সরকার এর জবাব দেবে।

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেনাপ্রধান নিজেই কাল জম্মু-কাশ্মীরে যাচ্ছেন। রাজৌরিতে ডিভিশন হেডকোয়ার্টার ও ৯৩ নম্বর ব্রিগেডের হেডকোয়ার্টার ছাড়াও সীমান্তে মোতায়েন সেনাদের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। আজকের হামলা নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিরেক্টর অফ মিলিটারি অপারেশনস বিনোদ ভাটিয়াকে। সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, যেখানে যখন প্রয়োজন, তখন প্রত্যাঘাত করার অধিকার আছে ভারতীয় সেনার।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.