|
|
|
|
নন্দীগ্রামে জয়ী নির্দলরা ঝুঁকছে তৃণমূলের দিকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
ক’দিন আগেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে যাঁরা মুখোমুখি লড়াই করেছেন, তাঁরাই আবার এক মঞ্চে। সোমবার সকালে নন্দীগ্রামের গড়চক্রবেড়িয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সামসাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী ১২ জন নির্দল সদস্যই। ওই নির্দল সদস্যরা সকলেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিক্ষুদ্ধ হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। অনুষ্ঠানের ফাঁকে বিজয়ী নির্দল সদস্যদের সঙ্গে কথাও বলেন শুভেন্দু। সেখানেই নির্দল প্রার্থীরা শুভেন্দুর কাছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাব সাদরেই মেনে নেনে তৃণমূল সাংসদ।
সামসাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতে এ বার ১৩টি আসনের মধ্যে ৭টিতেই জয়ী হয়েছেন নির্দলরা। এছাড়া তৃণমূল ৪টি ও কংগ্রেস ২টি আসনে জয়ী হয়েছে। ফলে ওই পঞ্চায়েতে নির্দল সদস্যরাই বোর্ড গড়ার দাবিদার। ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই ওই নির্দল সদস্যদের দলে ফেরাতে তৎপর হয়েছে তৃণমূলের একাংশ। তবে অতনু জানা, শেখ রহিমুল ইসলামের মত বিজয়ী নির্দল সদস্যরা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেননি। ভোল পাল্টে তাঁদের অন্যতম নেতা শেখ আমিরুল জানান, “আমরা সবাই তৃণমূলের কর্মী সমর্থক ছিলাম। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমরা কোন প্রচারও করিনি। আমাদের লড়াই ছিল স্থানীয় পঞ্চায়েতের কিছু ব্যক্তির দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এলাকার মানুষের রায়ে আমরা জিতে এসেছি।” প্রাক্তন অঞ্চল তৃণমূল যুব নেতা শেখ আমিরুল বলেন, “অন্যান্য কয়েক বছরের মত এ দিনও সাংসদের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমরা গিয়েছিলাম। দলে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।” তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দল সদস্যদের দলে ফেরানো নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ বিরোধিতা করলেও দলের বিক্ষুদ্ধ অংশকে ফেরানোর পক্ষে খোদ শুভেন্দুবাবু। ফলে এদিন তাঁর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কেন্দেমারি ও কালীচরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সামসাবাদের বিজয়ী নির্দল সদস্যদেরাও। অনুষ্ঠানের ফাঁকে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে আলোচনাও হয়। তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “প্রতি বছরের মত এবারও ঈদের আগে স্থানীয় দুঃস্থ মানুষদের বস্ত্র বিতরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলাম। সেখানে ওই নির্দল সদস্যরা এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। তাঁরা সবাই আমাদের দলে যোগ দিতে চেয়েছেন। আমরা ওই পঞ্চায়েতে সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে বলেছি।”
এ দিন গড়চক্রবেরিয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নন্দীগ্রামের দুই তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান ও আবু তাহের। জয়ী নির্দল প্রার্থীদের বেশীরভাগই শেখ সুফিয়ানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ভোটের আগে থেকেই ওই নির্দল প্রার্থীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। শেখ সুফিয়ান বলেন, “সামসাবাদের জয়ী নির্দল সদস্যরা আমাদের দলেরই
দীর্ঘ দিনের সমর্থক। নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতলেও তাঁরা আমাদের দলের হয়ে কাজ করতে চেয়েছে। এনিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।” নন্দীগ্রামের অপর তৃণমূল নেতা আবু তাহের অবশ্য বলেন, “কেউ দলে যোগ দিতে চাইলে তাঁকে নেওয়া হবে। কিন্তু যাঁরা আমাদের দলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তাঁদের নেওয়ার আগে দলের নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|