বাসস্ট্যান্ডের রক্ষণাবেক্ষণ নেই, টানাপোড়েন পুরসভা ও সংস্থার
বাসস্ট্যান্ড রক্ষণাবেক্ষণ ও যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থা বাস পিছু অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে, না দিতে চাইলে দুর্ব্যবহার করছে এমনকী বাস বন্ধও করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে দুর্গাপুর মহকুমা বাসকর্মী অ্যাসোসিয়েশন। তাঁদের দাবি, বাসস্ট্যন্ডের রক্ষণাবেক্ষণও যথাযথ হচ্ছে না। পুরসভার পূর্ত দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই পুরসভার পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।
দুর্গাপুর রেল স্টেশনের বাইরে এই বাসস্ট্যান্ডে মিনিবাস, সরকারি, বেসরকরি বড় বাস মিলিয়ে প্রতিদিন চারশো’রও বেশি বাস চলাচল করে। জেলা ছাড়াও বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এমনকী প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের বাসও এই বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসে গড়ে প্রায় ৪ লক্ষ ২১ হাজার যাত্রী দুর্গাপুর স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন। তাঁদের অধিকাংশই এই বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করেন। যাত্রীদের অভিযোগ, বাসস্ট্যান্ডে নিকাশি এবং শৌচাগারের বেহাল দশা। অনেকেই খোলা জায়গায় প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সারেন। ফলে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়ে বলে তাঁদের অভিযোগ।
যাত্রীরা জানান, ট্রেনে এসে স্টেশনে নামার পরে বাসস্ট্যান্ডে ঢুকলেই মন খারাপ হয়ে যায়। শহরের বি-জোনের বাসিন্দা সুশান্ত দত্ত বলেন, “দুর্গাপুর এখন ঝকঝকে শিল্পশহর। কিন্তু স্টেশন লাগোয়া বাসস্ট্যান্ডের হাল সেই আগের মতো।” যাত্রীদের অভিযোগ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বাসকর্মীদের সংগঠন, দুর্গাপুর মহকুমা বাসকর্মী অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের পক্ষে সঞ্জীব সাহা, নিতাই বসাকেরা বলেন, “পরিষেবা থেকে যাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন তো বটেই। বিপাকে পড়েছি আমরাও।” তাঁর অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বাস পিছু নির্ধারিত অর্থের চেয়ে জোর করে বেশি টাকা আদায় করছে।

বাসস্ট্যান্ডের দু’পাশ জুড়ে সাইকেল আর মোটরবাইক।— নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার নিয়ম ভেঙে একই বাস থেকে একাধিকবার অর্থ নেওয়া হচ্ছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, রাতে যে বাসগুলি বাসস্ট্যান্ডে থাকে সেগুলির কর্মীদের কাছ থেকে জোর করে টাকা তোলা হচ্ছে। কিন্তু কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, “প্রতিবাদ করলে গায়ের জোর দেখানো হচ্ছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” ১৭ এপ্রিল সকালে দু’টি বাস থেকে যাত্রীদের জোর করে নামিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলেও তাঁর দাবি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ এপ্রিল থেকে টেন্ডার ডেকে ওই বেসরকারি সংস্থাটিকে বাসস্ট্যান্ডের রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োগ করা হয়েছে। সংস্থার কাজ হল বাসস্ট্যান্ড পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, রক্ষণাবেক্ষণ করা, যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়া, দুর্ঘটনা ঘটলে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। সেজন্য বড় বাস পিছু ১০ টাকা এবং মিনিবাস পিছু ৮ টাকা নেওয়ার কথা ওই সংস্থার। কিন্তু ওই সংস্থা কাজে গাফিলতি করছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ পেয়েছে পুরসভা। পুরসভার মেয়র পারিষদ (পূর্ত) প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, রাতে বাস থেকে টাকা নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সরকারি বাস থেকে টাকা নেওয়াও। বাকি অভিযোগগুলিও খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাটি অবশ্য উল্টে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ওই সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “বার্ষিক ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে টেন্ডার পেয়েছি আমরা। অথচ পুরসভা একতরফা ভাবে রাতের বাস ও সরকারি বাস থেকে টাকা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। জানিনা কীভাবে চলবে।” তাঁর দাবি, পুরসভার নিয়ম মেনেই তাঁরা বাস ও মিনিবাস থেকে টাকা নেন। কখনই অতিরিক্ত অর্থ দাবি করেন না। তিনি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু টেন্ডারের শর্ত ভেঙে আমাদের হাত বেঁধে দিলে কীভাবে কাজ করব?”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.