দু’সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট পচানোর জল পাচ্ছেন না হলদিবাড়ি ব্লকের কৃষকরা। একই ভাবে আমন ধানের রোয়া বুনতেও সমস্যা হচ্ছে কৃষকদের। জমি থেকে পাট তুলে, আঁশ ছাড়াতে জলে ভেজানোর প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন কৃষকরা। পাট কাটার পরে জমিতে আমন ধানের রোয়া বোনার কাজও শুরু হয়। বৃষ্টির অভাবে দুটি কাজেই সমস্যায় কৃষকরা।
জমিতে রোপণ করা আমন ধানের রোয়া জলের অভাবে শুকিয়ে হলুদ হয়ে যেতে শুরু করেছে ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। অনেকে আবার পাট কাটার পরে জলের অভাবে ধানের চারা বুনতেই পারেননি। কৃষি দফতরের কর্তারাও পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ব্লকের কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব মৈত্রী বলেন, “এই অবস্থা চলতে থাকলে চাষে ক্ষতি হবে।” |
কৃষি দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান এবং পাটের চাষ হয়েছে। বেশিরভাগ কৃষকই পাট কাটার পর আমন ধান লাগান। জমি থেকে পাট কাটার পরে লাগোয়া খানা খন্দে জমে থাকা জলে চুবিয়ে রাখা হয়। জলে ডুবে নরম হয়ে যাওয়ায় সহজেই পাটের আঁশ ছাড়ানো সম্ভব হয়। বৃষ্টির অভাবে জমি লাগোয়া নিচু এলাকায় জল শুকিয়ে যাওয়ায় পাট চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। এই পরিস্থিতে আঁশ ছাড়ানোর উপায় নেই বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। গত মাসের প্রথম সপ্তাহে টানা বৃষ্টি চলতে থাকায় আমন ধানের চারা রোপনের কাজ শুরু হয়। তবে গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে হলদিবাড়িতে সে ভাবে বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। সে কারণে এক দিকে যেমন রোপণ করা ধানের চারা শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে, তেমনই নতুন চারা বোনার ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়েছে।
ব্লকের বটেরডাঙা এলাকার কৃষক জ্ঞানেন্দ্রনাথ বর্মন, নয়াসড়ক এলাকার কৃষক রমজান আলিরা বলেন, “এখন বৃষ্টিই ভরসা। পাম্প সেট দিয়ে জমিতে জল দেওয়ার চেষ্টা করেও খুব একটা ফল মিলছে না।” এই পরিস্থিতিতে হলদিবাড়ি ব্লককে খরা প্রবণ বলে চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লক প্রভাবিত অগ্রগামী কিসান সভার হলদিবাড়ি ব্লকের সম্পাদক কমল রায়। তিনি বলেন, “ব্লককে খরা প্রবণ বলে ঘোষণা করা হোক।” তবে হলদিবাড়ি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি গোপাল রায় বলেন, “হলদিবাড়ি ব্লকের মত একটা ছোট এলাকাকে শুধুমাত্র খরা ঘোষণা করতে সরকারের সমস্যা হতে পারে, যদিও এই এলাকার পরিস্থিতির কথা আমরা যথাযথ জায়গায় জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত কোনও পদক্ষেপ হবে।” |