হাসপাতালে ডাক্তার সেজে আহতকে দেখল দালাল
দালালের ডাক্তারি!
সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগের ভিতরে চিকিৎসক সেজে দুর্ঘটনায় জখম এক বৃদ্ধাকে পরীক্ষা করে অস্ত্রোপচার করানোর জন্য নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন দালাল। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হল না। তিনি তো ধরা পড়লেনই, তাঁর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ উঠল এক হাউসস্টাফের বিরুদ্ধেও। শুক্রবারের এই ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
মুচলেকা দিয়ে টুটুল শীট নামে ওই দালাল ও নির্মাল্য রায় নামে ওই হাউসস্টাফ নিজেদের অপরাধের কথা মেনেছেন দাবি করে হাসপাতালের সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “আপাতত ওই হাউসস্টাফকে হাসপাতালে কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে। চার সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
টুটুলবাবু স্বীকার করেন, “রোগীপিছু ওই হাউসস্টাফকে ৬০ শতাংশ কমিশন দেওয়ার কথা বলেছিলাম। বিমাকর্মী হিসেবে তেমন রোজগার করতে না পেরে এই কাজ ধরেছিলাম। আর এই কাজ করব না।’’ অন্য দিকে, রবিবার টেলিফোনে নির্মাল্যবাবু দাবি করেন, “আমি দালালদের সঙ্গে যুক্ত নই। টুটুলবাবু নার্সিংহোমে কাজ করেন জানতাম। বৃদ্ধার পরিবার নার্সিংহোমে যেতে ইচ্ছুক জেনেই ওঁকে ডেকেছিলাম। আমার কোনও স্বার্থ ছিল না।”
এই হাসপাতালে দালাল চক্রের সক্রিয়তা নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে। নির্মাল্য রায় নামে ওই হাউসস্টাফ হাসপাতালের অস্থি বিভাগে সম্প্রতি যোগ দেন। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া শহরের পাঁচবাগার বাসিন্দা সুলোচনা দত্ত নামে ওই বৃদ্ধা বাথরুমে পড়ে ডান হাতে চোট পান। তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যালের বহির্বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক পরের দিন এক্স-রে করিয়ে আনতে বলেন।
হাসপাতাল ও ওই বৃদ্ধার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সুলোচনাদেবী যখন সেখানে বহির্বিভাগে যান, তখন রোগী দেখছিলেন নির্মাল্যবাবু। বৃদ্ধার এক্স-রে রিপোর্ট দেখে তিনি জানান, তাঁর হাত ভেঙেছে। অস্ত্রোপচার করতে হবে। সিনিয়র চিকিৎসকের মত নেওয়ার জন্য তিনি টুটুলবাবুকে ডাকেন।
বৃদ্ধার ছেলে অশোক দত্ত বলেন, “টুটুলবাবু এসে এক্স-রে প্লেট দেখেন। তার পরে মায়ের হাতের অবস্থা পরীক্ষা করে জানান, হাসপাতালে অল্প খরচে অস্ত্রোপচার করা গেলেও বিস্তর ঝক্কি। ২০ হাজার টাকা খরচ করলে তিনি নার্সিংহোমে তাড়াতাড়ি অস্ত্রোপচার করে দেবেন।”
টুটুলবাবুর কথাবার্তায় অশোকবাবুদের সন্দেহ হয়। তাঁরা হাসপাতাল সুপারকে পুরো ঘটনাটি জানালে তিনি বহির্বিভাগে গিয়ে ওই হাউসস্টাফকে চেপে ধরেন। খুঁজে আনা হয় টুটুলবাবুকেও। সুপার বলেন, “অস্ত্রোপচার করানোর সিদ্ধান্ত একজন হাউসস্টাফ নিতে পারেন না। দালালকেই বা বহির্বিভাগে তিনি কী ভাবে নিয়ে এলেন, তার সদুত্তরও ওই হাউসস্টাফ দিতে পারেননি। দু’জনেই মুচলেকায় স্বীকার করেছেন, বৃদ্ধাকে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে তাঁরা অস্ত্রোপচার করানোর ফন্দি এঁটেছিলেন।” বৃদ্ধার পরিবারের লোকজন ওই হাউসস্টাফ ও দালালের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.