এক পিচ পড়েছিল রাস্তায়। তবে এখনকার অবস্থা দেখে তা বোঝা খুবই দুঃসাধ্য।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর মহকুমার বেলেগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোলা বাজার থেকে ইদ্রিস আলির দোকান পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তায় নিত্য নাজেহাল হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। আগে কাঁচা রাস্তা ছিল। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে বাম আমলে পিছ পড়েছিল রাস্তায়। ব্যস, ওই পর্যন্তই। তার বছরের পর বছর কেটেছে, রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দিকে আর প্রশাসনের নজর পড়েনি। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে রাস্তা আর চলার যোগ্য নেই। যেখানে সেখানে বড় বড় গর্ত। পিচ বহু আগেই উঠে গিয়েছে। এখন খোয়াও উটে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। বর্ষায় এত হাঁটু কাদা। এমন অবস্থা যে অটো, রিকশা, মোটর সাইকেল ঠেলে নিয়ে যেতে হচ্ছে। খারাপ রাস্তার কারণে অনেকে গাড়িও তুলে নিয়েছেন। ফলে সমস্যা আরও বেড়েছে। |
একদা পিচের রাস্তার এখন এমনই অবস্থা। ছবি: সামসুল হুদা। |
এলাকার মানুষের আরও অভিযোগ, রাস্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা নিয়েও রাজনীতি শুরু হয়েছে। বাম আমলে রাস্তায় পিচ পড়েছিল। তারপর রাজ্যে ক্ষমতা বদলালেও রাস্তা সংস্কারের জন্য কেউ নজর দেয়নি। ২০০৮ সালে এই গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিএমের ছিল। পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ ছিল তৃণমূলের। কিন্তু বার বার আবেদন জানানো হলেও জেলা প্রশাসনের টনক নড়ানো যায়নি। ক্যানিংয়ের দাঁড়িয়া, হাটপুকুরিয়া, ঢোসাহাট, বেলেগাছি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে এই রাস্তার যোগ রয়েছে। এই রাস্তাতেই রয়েছে ঘোলা উচ্চ বিদ্যলয়, দাঁড়িয়া যমুনা-লক্ষ্মী নারায়ণ হাইস্কুল, যদুনাথ দাস ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। সাধারণ যাত্রী থেকে ছাত্রছাত্রী নিত্য কয়েক হাজার মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করেন। এমনই কয়েজন ডালিম মোল্লা, দিবাকর মণ্ডলরা জানালেন, “রাস্তার এমন অবস্থা যে যানবাহন যেতে চায় না। গেলেও রাস্তার জন্য অতিরিক্ত বাড়া গুনতে হয়। রাস্তা সারানো নিয়ে সিপিএম-তৃণমূলের রাজনীতিতে ভুগছি আমরা সাধারণ মানুষই।
বেলেগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সিপিএমের ওয়াজেদ মোল্লা বলেন, “এতদিন জেলা পরিষদে তৃণমূল ক্ষমতায় ছিল। রাস্তাটি সারানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে বার বার বলেছি। কিন্তু কাজ যে হয়নি তা দেখতেই পাচ্ছেন।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা নওশের মিদ্যে বলেন, “পঞ্চায়েতে দীর্ঘদিন ওরা ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও কোনও উন্নয়ন করেনি। এখন মিথ্যা অভিযোগ করছে। তবে রাস্তাটি যাতে সারানো হয় সে জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি।”
জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি বিমল মিস্ত্রি বলেন, “আমার আমলে রাস্তার জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। সেইমতো রাস্তাও হয়। তার পর থেকে ওরা (তৃণমূল) আর রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ করেনি।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের কারণে আর বর্ষার জন্য রাস্তার সারানোর কাজে হাত দেওয়া যায়নি। রাস্তা যাতে সারানো হয় সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” |