লড়াই শেষ হয়ে গেল হাওড়ার সালকিয়ার তিনকড়িনাথ বসু লেনের এগারো বছরের বালিকার। গত বুধবার সন্ধ্যায় দুষ্কৃতীর হাতে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর থেকে হাসপাতালে যুঝছিল সে। রবিবার সকাল ১০টা ৪০-এ এসএসকেএম হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এর পরে ওই বালিকার দেহ কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে, তা নিয়ে দিনভর চলে টানাপোড়েন। অভিযোগ, এলাকার কয়েক জন তৃণমূল নেতা মা-বাবার অনুমতি ছাড়াই ওই বালিকার দেহ সোজা তার মামারবাড়িতে নিয়ে যান। পরে বাঁধাঘাট শ্মশানে নিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এলাকার তৃণমূল নেতারা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। |
গত বুধবার সন্ধ্যায় সালকিয়ার তিনকড়িনাথ বসু লেনের একটি ঝোপে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিল ওই বালিকা। সেই সময়ে দুষ্কৃতীর হাতে আক্রান্ত হয় সে। অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতী তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। মেয়েটি তাকে চিনে ফেলে সব বলে দেওয়ার ভয় দেখালে সে ঝোপ থেকে কেরোসিনের বোতল বার করে মেয়েটির গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন ধরা অবস্থাতেই মেয়েটি বাড়ির দিকে দৌড়তে থাকে। এর পরে রাস্তার জমা জলে শুয়ে পড়ে বাঁচার চেষ্টা করলেও ৭০ শতাংশ পুড়ে যায় তার শরীর। প্রথমে হাওড়া জেলা হাসপাতাল, পরে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয় তাকে। ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত ছিল এলাকা। মূল অভিযুক্ত কুন্দন মল্লিক গ্রেফতার হয় শনিবার।
রবিবার সকালে ওই বালিকার মৃত্যুর খবর আসতেই দোষীকে ফাঁসি দেওয়ার দাবিতে পথ অবরোধ করেন এলাকার মহিলারা। অভিযোগ, সেই ফাঁকে হাসপাতাল থেকেই এলাকার কয়েক জন তৃণমূল নেতা ওই বালিকার দেহ কার্যত তাঁদের দখলে নিয়ে নেন। ওই বালিকার বাবা-মাকে না জানিয়েই তাঁরা মেয়েটির দেহ তার নিজের বাড়িতে নিয়ে না গিয়ে সালকিয়ার উড়িয়াপাড়ায় তার মামারবাড়িতে নিয়ে যান। আরও অভিযোগ, উত্তর হাওড়ার তৃণমূল সভাপতি গৌতম চৌধুরীর নেতৃত্বেই পুরো ঘটনাটি ঘটে।
এ দিকে, ওই বালিকার দেহ বাড়িতে আনা হল না কেন, তা নিয়ে এলাকায় শুরু হয় বিক্ষোভ। এলাকার বাসিন্দারা গোলাবাড়ি থানার সামনে সালকিয়া স্কুল রোড অবরোধ করেন। বিক্ষোভ হয় গোলাবাড়ি থানার সামনেও। তাঁদের অনুমতি না নিয়ে ওই বালিকার দেহ সোজা মামারবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মেয়েটির বাবাও। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ওই বালিকার দেহ পাড়ায় নিয়ে এলে বিক্ষোভ আরও বাড়ত। তাই তৃণমূল নেতৃত্ব দেহটি পাড়ায় আনেননি। যদিও উত্তর হাওড়া তৃণমূলের সভাপতি গৌতম চৌধুরীর দাবি, “ওই মেয়েটি মামার বাড়িতে থাকত। মেয়েটির মা-বাবার অনুমতি নিয়েই হাসপাতাল থেকে মামার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
হাওড়া সিটি পুলিশের (ডিসি) সদর নিশাত পারভেজ বলেন, “পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ধ্যা
সাড়ে সাতটা নাগাদ মা বাবার উপস্থিতিতেই বাঁধাঘাট শ্মশানে ওই বালিকার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। |