অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বিকাশই সভাধিপতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বোলপুর |
প্রত্যাশিত ভাবেই বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে নাম ঘোষণা করা হল অনুব্রত-অনুগামী বিকাশ রায়চৌধুরীর। রবিবার বোলপুর পুরসভার অনুষ্ঠান ভবনে তৃণমূলের তরফে জেলা চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বিকাশবাবুর নাম ঘোষণা করেন। বিকাশবাবুর পাশাপাশি সর্বসম্মতিক্রমে সহ-সভাধিপতি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে জেলা পরিষদের ২৯ নম্বর আসনে নির্বাচিত সদস্যা রাখি লেটকে। জেলা তৃণমূল ওই দু’টি নামের প্রস্তাব রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠাবে। |
বিকাশ রায়চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র |
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতাই যে সভাধিপতি হবেন, তা নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। আর সে ক্ষেত্রে সবার উপরে নাম ছিল দলের সহ-সভাপতি বিকাশ রায়চৌধুরীই। এমনকী তিনিই যে সভাধিপতি হবেন, ভোটের বহু আগে থাকতেই অনুব্রত-গোষ্ঠী দলের ভেতরে-অন্দরে সেই প্রচারই চালিয়ে ছিল বলে খবর। তবে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বড় অংশের মনে একটা আশঙ্কা ছিলই। জেলা সভাপতির বিরোধী বলে পরিচিত গদাধর-গোষ্ঠী সহজে ওই পদে কোনও অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ নেতাকে মেনে নেবেন না বলেই তাঁরা মনে করছিলেন। যদিও রবিবার সব হিসেব উল্টে দিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে দু’টি নাম বেছে নেওয়া হয়। বিক্ষুব্ধ-গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত নানুরের বিধায়ক গদাধর হাজরাও জানিয়েছেন, সর্বসম্মতিক্রমেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। একই দাবি আশিসবাবুরও। সহ-সভাধিপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্য গদাধর-গোষ্ঠীর দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছে। রাখিদেবী রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী বলেই রাজনৈতিক মহলে পরিচিত।
এত সহজে কী করে ওই দু’টি নাম ঠিক হয়ে গেল?
অনুব্রত-বিরোধী গোষ্ঠীর এক নেতার স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, “আসলে বিকাশ রায়চৌধুরীকে মেনে নেওয়া ছাড়া কোনও বিকল্পও তো ছিল না। নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে জেলা সভাপতির অনুগামীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলে আপত্তি করলে ভোট হত। আর তাতে সহ-সভাধিপতির পদটাও আমাদের হারাতে হত। বিরোধিতার বদলে এই সমঝোতাতে আমাদেরও লাভ হল।” এ দিকে জেলা সভাধিপতি হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা হওয়ার পরে বিকাশবাবু বলেন, “অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে ত্রিস্তর পঞ্চায়ত ভোটে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে। আমরা এই জেলায় এ বার উন্নয়নের ধারা বইয়ে দেব।” এ দিন দলের টিকিটে জেলা পরিষদের আসনে জিতে আসা সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা জুড়ে সামগ্রিক সাফল্যের জন্য সংবর্ধনা দেওয়া হয় অনুব্রত মণ্ডলকেও। আজ, সোমবার তাঁরই ওই দু’টি নামের প্রস্তাব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। |