সিপিএমের এক জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যকে পদত্যাগ করতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার গভীর রাতে কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েতের এগারো মাইলে ঘটনাটি ঘটে। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কাঁকসা ব্লকে ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বড় ব্যবধানে সবগুলো সিপিএম দখল করলেও এ বার কাঁকসা ও ত্রিলোকচন্দ্রপুর বাদে বাকি ৫টিতেই হেরেছে তারা। তবে বনকাটি পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনের মধ্যে সিপিএম ও তৃণমূল দু’দলই পেয়েছে ৬টি করে। একটি আসনে জিতেছেন তৃণমূল সমর্থিত নির্দল প্রার্থী রঘুমনি সোরেন। বেলডাঙা এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে দলের হয়েই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন রঘুমনিবাবু। কিন্তু পরে দলীয় প্রতীক বিলির সময়ে পদ্ধতিগত ত্রুটিতে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম বাদ যায়। তৃণমূল সমর্থিত নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি।
সিপিএমের দাবি, এগারো মাইল এলাকা থেকে তৃণমূল জোর করে তাদের জয়ী সদস্য মৃণাল শিকদারকে পদত্যাগ করানোর চেষ্টা করছে। তাদের অভিযোগ, শনিবার গভীর রাতে জনা তিরিশের একটি দল মৃণালবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়। দলের প্রাক্তন কাঁকসা জোনাল সম্পাদক তথা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলের অভিযোগ, “মৃণালবাবুকে হুমকি দেওয়া হয় পদত্যাগ না করলে তাঁকে গ্রামছাড়া করা হবে। পরে তাঁকে দিয়ে একটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়।” বনকাটি পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান তথা স্থানীয় সিপিএম নেতা অজিত ঘোষ জানান, ব্লক অফিসে গিয়ে ওই প্রার্থীকে যতদ্রুত সম্ভব পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, “যেভাবেই হোক ওই পঞ্চায়েত দখল করতে চাইছে তৃণমূল। বাকিগুলিতে গায়ের জোর ফলালেও একটি আসনের জন্য বনকাটিতে ব্যর্থ হয়েছে ওরা। তাই এখন হুমকি দিয়ে আমাদের জয়ী প্রার্থীকে পদত্যাগ করিয়ে পঞ্চায়েতের দখল নিতে চাইছে।”
এ দিকে নির্বাচনের ফল বেরোনোর সপ্তাহখানেকের মধ্যে এমন অভিযোগ ওঠাই বিব্রত তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রচার শুরুর পরেও কাঁকসার বামুনাড়ায় এক সিপিএম প্রার্থীকে লিফলেট বিক্রি করে দলত্যাগের ঘোষণা করতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও ওই প্রার্থী প্রকাশ্যে তা স্বীকার করেননি। তৃণমূলের দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছিল, ওই প্রার্থী স্বেচ্ছায় সিপিএম ছেড়ে তাদের দলের হয়ে কাজ করছেন। এবারের অভিযোগও অস্বীকার করছেন তৃণমূল নেতারা। দলের ব্লক যুব সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী সদস্য পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা কাউকে জোর করি না। যাঁরা আসেন তাঁরা স্বেচ্ছায় আসেন। তৃণমূলের উন্নয়ন দেখে ভবিষত্যেও বহু সিপিএম প্রার্থী দলে যোগ দেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।” |