এই নিয়ে পর পর চার বার আসিফ রাঘবের মুখোমুখি হল। এক বার তো রাঘবের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে কোনও রকমে মৃত্যু মুখ থেকে ফেরত এসেছিল। তা সত্ত্বেও গত কাল ফের আসিফ একেবারে রাঘবের ডেরায় ঢুকে পড়েছিল। আশপাশের মানুষজন দ্রুত তাকে ওই ডেরা থেকে বের করে আনে।
জামশেদপুরের রাঘব আসলে একটি পূর্ণবয়স্ক রয়েল বেঙ্গল টাইগার। আর আসিফ? পুলিশের ভাষায়, এক মনোরোগী যুবক। বছর তিরিশের
এই যুবককে কেন্দ্র করে ঘুম ছুটে গিয়েছে জামশেদপুর পুলিশ ও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কথায়, এক বছরের মধ্যে চার বার আসিফ বাঘের মুখোমুখি হওয়ার চেষ্টা করেছে। গত বছর জুলাই মাসে একবার সে সরাসরি রাঘবের মুখোমুখি পড়েও যায়। তারপরের অভিজ্ঞতা অবশ্য বিশেষ সুখকর হয়নি। বাঘের সঙ্গে হাত মেলাতে গিয়ে বাঘের কামড়ে আসিফের পুরো হাতটাই যেতে বসেছিল। বাঘের কামড়ে গোটা শরীরই ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। শুক্রবারও সে চেষ্টা করেছিল জামশেদপুরের টাটা চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচায় ঢুকতে। কিন্তু তাকে শেষ মুহূর্তে ধরে ফেলেন সেখানকার রক্ষীরা। |
ঘটনার পরে আসিফকে বিষ্টুপুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানাচ্ছে, থানায় বসে মাঝেমাঝেই আসিফ মুখ দিয়ে বাঘের মতো আওয়াজ করার চেষ্টা করছিল। নিজের ব্যাঘ্রপ্রীতির কথা সে নিজেই পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই যুবকের মানসিক সমস্যা রয়েছে। তার চিকিত্সাও চলছে। পুলিশ আসিফের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছে, সে আগে বহুরূপী ছিল। বাঘের সং সাজত। মানগোর কপালির বাসিন্দা আসিফ। তাঁর প্রতিবেশীরা জানান, গ্রামে কোনও উত্সব হলে আসিফ বাঘ সাজত। সারা গায়ে কালো হলুদ ডোরাকাটা রং করে সে ‘জুলুস’-এ হাঁটত। বাঘের মতো গর্জন করার চেষ্টা করে অন্যদের মনোরঞ্জন করত। কিন্তু বছর দু’য়েক ধরেই সে মানসিক রোগে ভুগছে। সব সময় সে নিজেকে বাঘের সমগোত্রীয় বলে ভাবে।
টাটা চিড়িয়াখানার অধিকর্তা বিপুল চক্রবর্তী জানান, “চার বারই ঘটনাচক্রে রাঘব নামে ওই বাঘটির কাছেই সে গিয়েছে।” তবে এই ঘটনাকে হালকা করে দেখতে চাইছেন না চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এক আধিকারিকের কথায়, “আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। একবার ওই যুবক
খাঁচায় ঢুকে পড়েছিল। কোনও ভাবে তাকে বাঁচানো হয়েছিল। কোনও দুঘর্টনা ঘটলে তখন দায় আমাদের উপরেই আসবে। পুলিশেরই বিষয়টি দেখা উচিত।”
তবে আটক করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ওই যুবককে ছেড়ে দিয়েছে বিষ্টুপুর থানা। পূর্বী সিংভূম পুলিশের এক উচ্চ পদস্থ অফিসারের কথায়, “মনোরোগীর জন্য চিকিত্সা প্রয়োজন। পুলিশের এখানে কোনও ভূমিকা নেই। পুলিশের পক্ষে কোনও মনোরোগীর ওপরে টানা নজরদারি চালানো সম্ভব নয়।” তবে প্রশাসনকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এর আগে কলকাতা চিড়িয়াখানায় এক মত্ত যুবক সরাসরি বাঘের খাঁচায় ঢুকে পড়ে। তবে তাকে আক্ষত বের করা যায়নি। বাঘের হামলায় হাওড়ার শালিমারের বাসিন্দা এই যুবকের মৃত্যু হয়।
|
চোরাশিকারিদের কারাদণ্ড
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
চোরাশিকার এবং বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচারের দায়ে ১১ জনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিলেন বরপেটার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আর এ রহমান। সাজাপ্রাপ্তদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও দিতে হবে। ২০০৯ সালের মার্চে বরপেটা স্টেশনের পাশে একটি গুদামে হানা দেন মানস জাতীয় উদ্যানের অধিকর্তা অনিন্দ্য স্বরগোয়ারি এবং উপ অধিকর্তা সি আর ভোবরা। সেখান থেকে মেঘলা চিতাবাঘ, গন্ডার, প্যাঙ্গোলিন, সম্বর, হগ ডিয়ার, ভোঁদড় এবং ম্যাকাকের চামড়া উদ্ধার করেন তাঁরা। পাওয়া যায় হাতি, বাঘের দাঁত, হাড়। |