মালদহে জেলাপরিষদ গঠনের জন্য তৃণমূলের মুখাপেক্ষী হওয়ার দরকার নেই বলে মনে করছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা পরিষদ গঠনে তৃণমূলের সহযোগিতা নেওয়া হবে কি, হবে-না তা নিয়ে মালদহের কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী টালবাহানা করায় প্রদেশ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ইতিমধ্যেই জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও ঘনিষ্ঠ মহলে প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, তৃণমূলের সাহায্য নেওয়ার ব্যাপারে অধিকাংশ জেলা নেতার আপত্তি আছে। দলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, “আমাদের পিঠে তৃণমূলের আঘাতের চিহ্ন এখনও দগদগে। ফলে তাদের সঙ্গে এই মুহূর্তে কংগ্রেসের হাত মেলানোর প্রশ্ন নেই।” পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনার জন্য কাল, রবিবার জেলা কংগ্রেস সভাপতিদের প্রদীপবাবু প্রদেশ দফতরে ডেকেছেন। সে দিনই ডালুবাবুর সঙ্গে কথা চান প্রদীপবাবু।
উত্তরবঙ্গের দুই জেলা মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে জেলা পরিষদ ত্রিশঙ্কু হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরে কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয় দলই জানিয়ে দিয়েছে, তারা বিরোধী আসনে বসবে। সেখানে জেলা পরিষদ গঠনের পথে বামফ্রন্ট। কিন্তু মালদহে পরিস্থিতি এখনও জটিল। কংগ্রেসের জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদে নির্বাচনে দাঁড়ানো উচিত বলেই অধিকাংশ প্রদেশ ও জেলার নেতা মনে করেন। তবে ডালুবাবু বা তাঁর অনুগামীরা ভবিষ্যৎ রাজনীতির কথা মাথায় রেখে তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে আগ্রহী। কিন্তু জেলা ও প্রদেশ নেতাদের অনেকেরই অভিমত, জেলা পরিষদ ও পরিষদের স্থায়ী কমিটি গঠনে কংগ্রেস সুবিধাজনক অবস্থায়। কংগ্রেসের সাত বিধায়ক ও দুই সাংসদ রয়েছেন, ফলে জেলা পরিষদের স্থায়ী কমিটি গঠনে কংগ্রেস অনেকটাই এগিয়ে। মালদহে কংগ্রেস ও ফ্রন্ট ১৬টি করে আসন পেয়েছে। তৃণমূল পেয়েছে ছ’টি।
রবিবার ডালুবাবু-সহ বিভিন্ন জেলা কংগ্রেস সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠকের আগেই পঞ্চায়েত ভোটের ফল বিশ্লেষণ করতে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সহ-সভাপতিদের নিয়ে আজ, শনিবার বৈঠক করবেন প্রদীপবাবু। এ বারের ভোটে দলের বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধান ও জেলাওয়াড়ি দলের সাংগঠনিক শক্তি কী ভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব, তা-ও দেখা হবে বৈঠকে। তৃণমূলের সঙ্গে যুঝে দুর্বলতা কাটানোর উপায় নিয়েও কথা হবে আজ। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত এইআইসিসি নেতা শাকিল আহমেদ খান রবিবার-সোমবার জেলা কংগ্রেস সভাপতি এবং জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে জেলাওয়াড়ি ফল পর্যালোচনা করবেন। বৈঠকের নির্যাস নিয়ে প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে হাইকম্যান্ডের বৈঠকে হবে।
|